সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ গুনাহ থেকে ক্ষমার ৪ দোয়া

 সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ গুনাহ ক্ষমার ৪ দোয়া

দোয়া একটি মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক সম্মানিত কোনো কিছু নেই’ (ইবনে মাজাহ: ৩৮২৯) দোয়াকে বলা হয় মুমিনের হাতিয়ার। প্রিয়নবী (স.) উম্মতকে ফজিলতপূর্ণ ও পুণ্যময় অনেক দোয়া শিখিয়েছেন। তাতে এমন কিছু ছোট ছোট দোয়া রয়েছে, যা পাঠ করলে সব গুনাহ মাফ করা হয়। এমনকি কিছু দোয়ার কারণে সমুদ্রের ফেনার সমান গুনাহও মাফ করা হয় বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

 

তেমনই ৪টি দোয়া এখানে উল্লেখ করা হলো-

১. لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। অর্থ: ‘আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ সুমহান, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপ মুক্তির কোনো পথ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ইবাদতের কোনো শক্তি নেই’। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, পৃথিবীর বুকে যে ব্যক্তি দোয়াটি বলে, তার অপরাধগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির মতো (বেশি পরিমাণ) হয়। (তিরমিজি: ৩৪৬০)

 

২. لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ উচ্চারণ:  ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।’ অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি একক। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। সামগ্রিক রাজত্ব তাঁরই। সব প্রশংসা তাঁর। তিনিই সবকিছুর নিয়ন্তা।’

 

নবীজি বলেছেন, প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করার পর ‘যে ব্যক্তি এই দোয়াটি পাঠ করবে তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (মুসলিম: ৫৯৭)

৩. سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ‏ উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি’ অর্থ: ‘আল্লাহর পবিত্রতা বয়ান করছি। তাঁর গুণগান করছি।’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার দোয়াটি পড়বে, তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও’ (বুখারি: ৬৪০৫; মুসলিম: ২৬৯১)

 

৪. لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُاللَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ উচ্চারণ: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।’ অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি একক। তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব একমাত্র তাঁরই। সব প্রশংসা তাঁর। তিনিই সবকিছুর নিয়ন্তা। আল্লাহর আশ্রয় ও সাহায্য ছাড়া কোনো গতি নেই। আল্লাহর পবিত্রতা বয়ান করছি। তাঁর গুণগান করছি। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনিই মহান।’ রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি শোয়ার সময় দোয়াটি পাঠ করবে, তার গোনাহ সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৫২৮)

 

হাদিসবিশারদগণ বলেন, কবিরা বা গুরুতর গোনাহ নিষ্ঠার সঙ্গে তওবা করা ছাড়া ক্ষমা করা হবে না। উল্লেখিত দোয়াগুলোর ফজিলত কেবল সগিরা (ছোট) গুনাহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই কবিরা গোনাহর কারণে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উল্লেখিত দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।