প্রশ্নঃ ৯. একটি গরুতে কয়জনের আকিকা দেওয়া যাবে,আকিকার এবং আকিকার নিয়ম কি?
প্রশ্নঃ ৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, (1)একটা
গরু
তে
কজোনার
আকিকা
চলবে
এবং
আকিকার
কি
নিওম
সেটা
পরিস্কার
করে
বলবেন
ইনসাআলল
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله
وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আকীকার ক্ষেত্রে
সুন্নাত
হলো
ছাগল,
ভেড়া
বা
এজাতীয়
পশু
জবেহ
করা।
ছেলের
জন্য
দুটি
আর
মেয়ের
জন্য
একটি।
তবে
ছেলের
জন্যও
একটা
দেয়া
যায়,
এটা
হাদীসে
আছে।
সকল
ক্ষেত্রে
আমাদের
সুন্নাতের
অনুস্বরণ
করা
উচিৎ।
গরু
দিয়ে
আকীকা
রাসূলুল্লাহ সা. কিংবা সাহাবীগণ
করেননি।
তবে
আলেমগণ
গরু
দিয়ে
আকীকা
করাকে
জায়েজ
বলেছেন।
আবার
এক
পশুতে
একাধিক
আকীকাও
সাহবীগণ
দেননি।
তবে
আলেমগণ
কুরবানীর
উপর
কিয়াস
করে
বলেন,
বড়
পশুতে
একাদিক
কুরবানী
দেয়া
জায়েজ।
সে
হিসেবে
সাত
জনের
জন্য
একটি
গরু
আকিকা
দেয়া
যাবে।
আকিকার_বিধানঃ-------------------
ইসলামের পরিভাষায় সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর আল্লাহর শুকরিয়াস্বরূপ যে জন্তু যবাই করা হয় তাকে আকীকা বলা হয়। সামর্থবান পিতার উপর
সন্তানের আকিকা করা ওয়াজিব।
- হযরত সামুরা বিন জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকিকার বিনিময়ে
বন্ধক স্বরূপ থাকে। কাজেই সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে যবাই করবে এবং তার মাথা মুন্ডন করে নাম
রাখবে।’ [সুনান আবু দাউদঃ ২/৩৯২]
- হাদীসটির ব্যাখ্যায় ইমাম আহমদ বিন হাম্বল
রহ. বলেছেন, যে সন্তানের আকিকা করা হয়নি সে যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় মারা যায় তাহলে মা-বাবার জন্য আখিরাতে সুপারিশ করবে না।
-আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. যাদুল মা‘আদে লিখেছেন- আকীকা শয়তানের কবল থেকে সন্তানের হেফাযত ও সুরক্ষার জন্য উপায় ও উসিলা হয়।
আকীকা না করা হলে সন্তান শয়তানের প্রভাব মুক্ত হতে পারে না। --- ইবনুল কায়্যিম রহঃ
ব্যাখ্যাটিই অধিক যুক্তিযুক্ত মনে হয়। তবে কিছু উলামাদের নিকট আকিকা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
#রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘সন্তানের জন্য আকিকা করতে হয়। সুতরাং তোমরা তার পক্ষ থেকে যবাই কর এবং
তার জঞ্জাল দূর কর। (অর্থাৎ মাথার চুল কামিয়ে দাও।
#আকিকার_জন্তুঃ
আকিকা করতে হবে গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি প্রানী দ্বারা।
কুরবানীর ক্ষেত্রে পশু নিখুঁত হতে হয়, কিন্তু আকিকার ক্ষেত্রে পশু নিখুঁত হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে নিখুঁত করাই উত্তম।ছেলে হলে ২ ছাগল/গরু/ভেড়া/দুম্বা জবাই করতে হবে।
আর মেয়ে হলে ১ টি ছাগল/ভেড়া/দুম্বা জবাই করতে হবে। হযরত উম্মে কুরয কা‘বিয়া রা. বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘ছেলের জন্য সমপর্যায়ের দুটি ছাগল এবং মেয়ের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করবে। আর এতে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই-সেগুলো নর হোক কিংবা মাদী’ [সুনান আবু দাউদঃ ২/৩৯২]
- "সমপর্যায়ের" ব্যাখ্যায় ইমাম আহমদ রহ. বলেন, দেখতে উভয়টি একই ধরণের হবে। অথবা সে দু’টি একই বয়সের হবে। - অসচ্ছলতার কারণে পুত্র
সন্তানের ক্ষেত্রে যদি দু’টি ছাগল যবাই করা জটিল হয়, তাহলে একটি দিয়েও আকিকা আদায় হয়ে যাবে। "হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত হাসান রা. ও হযরত হুসাইন রা. এর পক্ষ থেকে একটি করে দুম্বা দিয়ে আকিকা করেছেন। [সুনান আবু দাউদঃ
২/৩৯২]
#উল্লেখ্য_কিছু_বিষয়ঃ
আকিকা শিশু জন্মের ৭ম দিনেই করতে হবে। রাসুল (সাঃ) থেকে ১৪ তম দিনে অথবা ২১ তম দিনে আকিকা করার কোন হাদিস নেই। মুসান্নাফে ইবনু
আবী শাইবাহ-তে সাহাবীদের আমল হিসেবে ১৪ তম দিনে এবং ২১ তম দিনে আকিকা করার হাদিস রয়েছে। এই হাদিসের সনদ অনেক মুহাদ্দিসের নিকট
বিতর্কিত।
তাই উলামাগণ এই দুই হাদিসের সমন্বয় করেছেন এভাবে-- যেহেতু রাসুল (সাঃ) থেকে ৭ম দিনেই নির্দেশ এসেছে তাই আকিকা ৭ম দিনেই করতে হবে।
কিন্তু যদি অনিচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে ৭ম দিনে কেউ করতে না পারে তবে সে ১৪ তম দিনে অথবা ২১ তম দিনে আকিকা করে নিবে।
আকিকার গোশত তিন ভাগ করার কোন বিধান নেই। উত্তম হয় যদি গোশত ফকির-মিসকিন, গরীব-দুঃখীকে সাদকা করে দিলে। এমন লোককে দেয়া
উচিৎ-- যে অভাবী কিন্তু লোকের কাছে হাত পাতে না। তাদের বাসায় বাসায় গিয়ে দিয়ে আসবেন।
'মহান আল্লাহ্' বলেনঃ " #সাদকা ঐ সকল অভাবী লোকের জন্যে যারা আল্লাহর পথে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছে। জীবিকার সন্ধানে (লজ্জায়) এরা যেখানে সেখানে যায় না। অজ্ঞ লোকেরা যাঞ্চা না
করার কারণে তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তোমরা তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে কাকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা চায় না।তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই পরিজ্ঞাত। (সুরা বাকারাঃ ২৭৩) আর নিজেও কিছু রান্না করে খাওয়া যাবে।
দারিদ্র বা অন্য কোন কারণে যদি উল্লেখিত দিন গুলোতে আকীকা করতে অক্ষম হয়, তবে সন্তান ছোট থাকা অবস্থায় যখনই অভাব দূর হবে, তখনই আকীকা করতে হবে। অভাবের কারণে যদি কোন লোক তার শিশু ছেলে-মেয়েদের আকীকা করতে না পারে, তাহলে সন্তান বড় হওয়ার পর যদি তার আর্থিক অবস্থা ভাল হয়, তখন আকীকা করলেও সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে এবং পিতা- মাতা ছাওয়াব পাবে, ইনশাআল্লাহ। এমন কি কারও পিতা-মাতা যদি আকীকা না করে, সে ব্যক্তি বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজে করলেও সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। আনাছ (রাঃ) হতে বর্ণিত,
(أن النبي صلى الله عليه وسلم عق نفسه بعد البعثة)
“ নবী (সাঃ) নবুওয়াত পাওয়ার পর নিজের আকীকা নিজে করেছেন”। (বায়হাকী) এ হাদীস থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর নিজের আকীকা নিজে দেওয়া বৈধ হওয়ার উপর সুস্পষ্ট দলীল পাওয়া যায়।
.প্রকৃতপক্ষে কোরবানী আল্লাহর নামেই দেওয়া হয়,,অর্থাৎ আল্লাহর ওয়াস্তেই দেওয়া হয়,,তাছাড়া মানুষের নামে যে দেয় এর অর্থ হচ্ছে এই যে_____ কোরবানীর সওয়াব টা যেন তার আমল নামায় পৌছায়...কোরবানী আল্লাহর জন্যই দেই,,কিন্তু মানুষের নামে বলতে মানুষের জন্য নয় বরং সওয়াব পৌছানোর জন্য তার নাম উল্লেখ করা হয়...
কুরবানির পশুর সাথে সন্তানের আকিকা দেওয়া যায়
তবে যদি নিয়ত করে রাখে কেউ তাহলে কিছু দ্বিমত আছে যথাসম্ভব নির্দিষ্ট সময়ে আকিকা দিতে হবে! কুরবানীর সময় বাচলে দিব এরকম নিয়ত করা যাবে না।
আল্লাহ্ আমাদের সকলকে সঠিক ইসলাম মেনে
চলার তৌফিক দান করুন আমীন।।____
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোঃ ইমদাদুল হক
No comments