প্রশ্নঃ ২০. ভন্ড পীরের অনুসারীদের সাথে ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে কি?
প্রশ্নঃ ২০. আসসালামুআলাইকুম
ওয়া
রাহমাতুল্লাহ, আমার বাবা গত
তিন
বছর
যাবত
বাড়ির
মানুষের
সাথে
অথাৎ
সাত
গিরস্তের
সাথে
কুরবানী
দেয়।
কিন্তু
এই
সাত
গিরস্তের
মধ্যে
একজন
দেওয়ানবাগীর মুরিদ। দেওয়ানবাগীর বিভিন্ন
হুজুরদের
এনে
এলাকাতে
ওয়াজের
নামে
ভন্ডামী
করে
যদিও
সে
একজন
ব্যংক
কর্মকতা।
এখন
আমি
আমার
বাবা-মাকে
বার
বার
বুঝিয়েছি
দেওয়ানবাগীর কোন মুরিদের সাথে
কুরবানী
করলে
কুরবানির
হবে
না।
তারা
তারপরও
সেই
মুরিদকে
সাত
ভাগের
মধ্যে
রেখেই
কুরবানি
করার
সিদ্ধান্ত
নিয়েছে।
তো
আমি
যেহেতু
ছাত্র
কুরবানির
করার
সামর্থ্য
নেই।
সেইক্ষেত্রে এখন আমার করনীয়
কি??
আর
কুরবানির
দিন
গরু
জবাই
বা
মাংস
কাটা
এ-সব
কাজে
আমি
অংশগ্রহণ
করবো
নাকি
বিরত
থাকব৷
ক্লিয়ারলি
যদি
বলেন
উপকৃত
হবো।
জাযাকাল্লাহ খাইরান
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
দেওয়ানবাগীর পীর সাহেব আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অনুসারী নন। সে ভক্তবৃন্দ ও মুরীদদেরকে এমন সব বিষয়ের শিক্ষা দিত যা সরাসরি ঈমান বিধ্বংসী আকীদা। তাদের দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ থেকে বিভিন্ন বই ও পুস্তিকা প্রকাশিত হয়ে থাকে। আমরা "আল্লাহ কোন পথে" বই থেকে তার কিছু বিষয় এখানে উল্লেখ করছি।
১. জিবরাঈল বলতে অন্য কেহ নন। স্বয়ং হাকীকতে আল্লাহ। (আল্লাহ কোন পথে; পৃষ্ঠা, ১০৩)
২. সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। হুজুররা ঘুমানোর জন্য তাড়াতাড়ি আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিছু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাযের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয় না। (মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যা নভেম্বর, ৯৯ পৃষ্ঠা নং)
৩. প্রভুর সাথে পুনরায় মিলনে আত্মার যে প্রশান্তি লাভ হয় তাই জান্নাত। আর আত্মার চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকে জাহান্নাম বলে। ( আল্লাহ কোন পথে, পৃ: ৪০)
৪. মুনকার নাকীর বলতে কোনো ব্যক্তির ভালো মন্দ কর্মবিবরণীকে বুঝায়। ( আল্লাহ কোন পথে; পৃষ্ঠা ৬৯)
৫. মীযান বলতে মানুষের পরিশুদ্ধ বিবেক বুঝায়। ( আল্লাহ কোন পথে পৃষ্ঠা নং ৫৭)
৬. মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতের যিন্দেগীকে পুলসিরাত বলা হয়। ( আল্লাহ কোন পথে পৃষ্ঠা নং ৬০)
৭. কুরআন হাদীস পড়ে আল্লাহকে পাওয়া যায় না। একমাত্র মুরশিদের সাহায্য নিয়ে আল্লাহকে পাওয়া সম্ভব। এমনকি দুনিয়াতে স্বচক্ষে দেখা যায়।
এ ছাড়া আরশে গিয়ে তার রূপে আল্লাহকে দেখতে পাওয়া, মা ফাতিমার সাথে তার বিবাহ হওয়ার মতো জঘন্য কথাবার্তাও তার বয়ানে পাওয়া যায়। এগুলো সব কুফরী কথা। ইসলামের সর্বজন স্বীকৃত বিধানবলীর এমন মনগড়া ব্যখ্যা করতেন যা কুরআন হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এগুলো কেউ বিশ্বাস করলে তার ঈমান থাকবে না।
তাই দেওয়ানবাগীর কথাবার্তা ও আকীদাকে যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে, তার সঙ্গে শরীকে কুরবানী করা সহীহ হবে না। যদি সাতভাগের কোনো একজন দেওয়ানবাগের বিশ্বাসী হন, তাহলে বাকী সকলের কুরবানী বাতিল বলে গণ্য হবে। তিনি যেহেতু ব্যাংক কর্মকর্তা, তাই ব্যাংকের কোনো সুদের টাকা কুরবানীতে শরীক করলে তাতেও কুরবানী বাতিল হয়ে যাবে।
তবে বুঝানো সত্বেও যদি আপনার বাবা দেওয়ানবাগীর ওই মুরিদকে শরিক রেখে কোরবানি করেন তাহলে তার গোশত বানানোর কাজে সহযোগিতা করতে কোনো সমস্যা নেই। এবং বিসমিল্লাহ বলে যবাই করা হলে উক্ত পশুর গোশত ভক্ষণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। কুরবানী বাতিল হলেও সাধারণ গরুর গোশত হিসেবে তা ভক্ষণ করা জায়েয হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম
খতীব, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ, মিরাশপাড়া গাজীপুর।
No comments