সেজদায় কুরআনে উল্লেখিত দোয়ার আয়াতগুলো পড়া যাবে কি?
নামাজের রুকু ও সেজদায় তাসবিহ-তাহলিল ও দোয়া করার কথা বলেছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কিন্তু রুকু কিংবা সেজদায় কুরআনুল কারিমের দোয়ার আয়াতগুলো কি পড়া যাবে? এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনাই বা কী?
রুকু কিংবা সেজদায় কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করা জায়েজ বা বৈধ নয়। রুকু এবং সেজদায় তাসবিহ-তাহলিল এবং দোয়া করার উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক বেশি। রুকুতে বেশি বেশি তাসবিহ এবং সেজদায় তাসবিহসহ দোয়া করলে সে দোয়া দ্রুত কবুল হয়। তাই সেজদায় কুরআনে উল্লেখিত দোয়া সমৃদ্ধ আয়াতগুলো পড়া যাবে।
রুকু ও সেজদা অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা বৈধ নয়। কেননা হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাহলো-
> হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে রুকু এবং সেজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করেছেন।’ (নাসাঈ)
> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘তোমরা শুনে রাখ! আমাকে নিষেধ করা হয়েছে রুকু অবস্থায় কেরাত (পড়া) থেকে এবং সেজদা অবস্থায়।’ (নাসাঈ)
রুকু ও সেজদায় তাসবিহ এবং দোয়া
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে অসুখে ইনতেকাল করেন, সে অসুস্থ অবস্থায় তিনি পর্দা খুললেন। তখন তার মাথার পট্টি বাঁধা ছিল। তিনি বললেন-
‘হে আল্লাহ! আমি পৌঁছিয়েছি, একথা তিনবার বললেন। বস্তুত যথার্থ স্বপ্ন ব্যতিত নবুওতের সুসংবাদ থেকে আর কিছুই বাকি রইল না। বান্দা তা দেখে অথবা তাকে তা দেখানো হয়।
তোমরা শুনে রাখ! আমাকে রুকু এবং সেজদায় কেরাআত (পড়া) থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, যখন তোমারা রুকু করবে তখন তোমাদের রবের তাজিম (শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রশংসা) করবে। আর যখন তোমারা সেজদা করবে তখন তোমারা বেশি বেশি দোয়া করার চেষ্টা করবে। কেননা এটা তোমাদের দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়।’ (নাসাঈ)
উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, রুকু ও সেজদায় কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করা যাবে না। বরং রুকু ও সেজদায় শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার প্রশংসা এবং দোয়া করা যাবে।
সৌদি আরবে স্থায়ী ফতোয়া কমিটি এ মর্মে ফতোয়া দিয়েছে যে-
সেজদায়
কুরআন
তেলাওয়াত
করা
জায়েজ
নেই।
কিন্তু
প্রশ্ন
হলো-
কুরআনুল
কারিমে
দোয়া
সম্বলিত
কিছু
আয়াত
রয়েছে,
সেগুলো
পড়া
যাবে
কি?
যেমন-
- رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا
بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا
অর্থ
: হে
আমাদের
প্রতিপালক!
আমাদের
সঠিক
পথ
পাওয়ার
আর
আমাদের
অন্তরকে
বিপথগামী
করো
না।’
(সুরা
আল-ইমরান
: আয়াত
৮)
সেজদা
অবস্থায়
কুরআনে
বর্ণিত
এ
জাতীয়
দোয়াগুলো
পাঠের
বিধান
কি?
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির জবাব-
لا بأس بذلك إذا أتى بها
على وجه الدعاء لا على وجه التلاوة للقرآن
অর্থাৎ এতে কোনো অসুবিধা নেই, যদি দোয়া হিসেবে কুরআনের আয়াত পাঠ করে। তবে কুরআন তেলাওয়াত হিসেবে নয়।’ (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাহ)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রুকুতে বেশি শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার তাসবিহ পড়ার পাশাপাশি সেজদায় দোয়া কবুলে বেশি বেশি দোয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
No comments