‘হজে মাবরুর’ এর ফজিলত
সামর্থবান পুরুষ ও নারীর জন্য হজ জীবনে একবার ফরজ। সামর্থবানদের জন্য সর্বোত্তম আমলও হজ। আর এ কারণেই হজে মাবরূর বা কবুল হজের বিনিময়ও অনেক বড় এবং ফজিলতপূর্ণ। তাই হজ পালনে পুরুষ ও নারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বারবার হজ করা অনেকের জন্যই সম্ভব নয়। কেননা হজ প্রথমত আর্থিক ইবাদত। আর হজ পালনে শারীরিক সক্ষমতা অনেক বেশি জরুরি। আর নারীদের হজতো আরো ব্যয় সাপেক্ষ। কারণ তাদের হজ পালনে একজন মাহরাম আবশ্যক।
হজের প্রতি সতর্কতা গ্রহণ করা জরুরি। হজের ফজিলতই হজের প্রতি সাবধানতা অবলম্বন ও গুরুত্ব উপলব্দি করার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলোা, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, হজে মাবরূর (কবুল হজ)।’ (বুখারি)
হজপালনকারীদের জন্য আকাঙ্ক্ষার সর্বোচ্চ লক্ষ্য বস্তু হলো মাবরূর হজ। উম্মুল মুমিন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা প্রিয়নবির কাছে সর্বোত্তম আমল ‘জিহাদ’-এ অংশগ্রহণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের জন্য মাবরূর হজকে সর্বোত্তম জিহাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেন, না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হলো, হজে মাবরূর।’ (বুখারি)
পরিশেষে…
হজপালনকারী সব নারী-পুরুষের উচিত সর্বোচ্চ সাবধানতার সঙ্গে ভুল-ত্রুটি এড়িয়ে হজের রোকনগুলো যথাযথ আদায়ে মনোযোগী হওয়া। তাকওয়া অবলম্বন তথা আল্লাহর ভয় ও রহমতের আশা-আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে হজ পালন করার চেষ্টা করা। কেননা মাবরূগ হজের বিনিময় হচ্ছে সরাসরি জান্নাত। আর সে হয়ে যাবে সদ্য ভূমিষ্ঠ নিষ্পাপ শিশুর মতো নিরাপরাধ।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গোনাহ থেকে বিরত থাকলো, সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরলো, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
অন্য হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক ওমরার পর আর এক ওমরা উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গোনাহের) জন্য কাফফারা। আর জান্নাতই হলো মাবরূর হজের প্রতিদান।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর হজ পালনকারীদেরকে সঠিকভাবে হজ সম্পাদনের তাওফিক দান করুন। সবাইকে হজে মাবরূর দান করুন। আমিন।
No comments