চাশতের নামাজ মানুষের যে উপকারে আসে
সংক্ষিপ্ত সময়ে অল্প নামাজে অনেক উপকার লাভ করা যায়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজ নামাজের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময় অনেক নামাজ আদায়কে সুন্নাত বলেছেন এবং তা আদায়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এমনই একটি নামাজ হলো ‘সালতুস চাশত বা চাশতের নামাজ’। এ নামাজকে সালাতুজ জোহাও বলা হয়।
মানুষের শরীরে ৪ হাজারের ওপরে জোড়া রয়েছে। এ সব জোড়ার হক আদায় করা বা সাদকা আবশ্যক। যেমন প্রতিটি তাসবিহ-তাহলিল বা সৎকাজের আদেশ-নিষেধ বা পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো ইত্যাদি কাজে এক-একটি জোড়ার হক আদায় হয়।
এভাবে সারা দিনে শরীরের প্রতিটি জোড়ার হক আদায় করা বা ৪ হাজার ভালো কাজ করা মানুষের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। তবে প্রিয়নবির ঘোষণায় এমনই একটি ইবাদত হলো ‘চাশতের নামাজ’। যা আদায় করলে এ সব হক আদায় হয়ে যায়।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে চাশতের নামাজের এ প্রয়োজনীয়তা ও উপকার তুলে ধরেছেন-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমার আন্তরিক বন্ধু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তিনটি অসিয়ত করেছেন।
>> প্রতি মাসে ৩দিন রোজা রাখা;
>> চাশতের ২ রাকাআত নামাজ আদায় করা;
>> ঘুমানোর আগে বিতর নামাজ আদায় করে নেয়া। (বুখারি ও মুসলিম)
চাশতের নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণনায় অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি বলেছেন, ‘সকালে তোমাদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাদকা করা আবশ্যক। প্রতিটি তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) সাদকা; প্রতি তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) সাদকা। প্রতিটি তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) সাদকা; প্রতিটি তাকবির (আল্লাহু আকবার) সাদকা। সৎ কাজের আদেশ দেয়া সাদকা। অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকা। আর এগুলোর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে চাশতের ২ রাকাআত নামাজ আদায় করা। (মুসলিম)
চাশতের নামাজের রাকাআত ও পড়ার সময়
সূর্য একটি বল্লমের সমান তথা ১ মিটার পরিমাণ ওপরে উঠার পর এ নামাজ পড়তে হয়। অর্থাৎ সুর্যোদয়ের পর ইশরাক নামাজ আদায়ের সময় থেকে শুরু করে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত এ নামাজ পড়া যায়।
আরববরা বলত, ‘চাশতের নামাজের সর্বোত্তম সময় হলো- সূর্যোদয়ের পর উটের বাচ্চা যখন গরম অনুভব করে; সে সময়টি হলো চাশতের নামাজের সময়।
চাশতের নামাজ কমপক্ষে ২ রাকাআত পড়তে হয়। বেশির কোনো সীমা নেই। তবে কেউ কেউ ১২ রাকাআতের কথা উল্লেখ করেছেন। সুতরাং প্রতিদিন সাধ্যমত ২, ৪ বা সময় সাপেক্ষে আরো বেশি পড়া যেতে পারে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর দেয়া সেরাদান শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাদকা আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন।
No comments