পরকালে পাল্লা ভারী ও হালকাকারী আমল সমূহ

পরকালে পাল্লা ভারী ও হালকাকারী আমল সমূহ

মানুষের ইহকালীন জীবনের আমল সমূহ পরকালে মীযানে (পাল্লায়) ওযন করা হবে। ঐসব আমলের মধ্যে কিছু পাল্লাকে ভারী করবে এবং কিছু হালকা করবে। এগুলো জেনে মুমিন আমল করতে পারলে অল্প আমলই তার নাজাতের কারণ হতে পারে। আবার যেসব আমল পাল্লাকে হালকা করবে সেগুলো জেনে তা পরিহার করলে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে মুক্তি মিলবে। নিম্নে দুধরনের আমলই উল্লেখ করা হল।-

যেসব আমল পরকালে দাঁড়িপাল্লাকে ভারী করবে

১. কালেমায়ে তাওহীদ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু :

তাওহীদের স্বীকৃতি প্রদানকারী কালেমা পরকালে পাল্লাকে ভারী করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে বসা ছিলাম। তখন বনভূমি থেকে সীজান (এক প্রকার মাছ) রঙের জুববা পরিহিত এক ব্যক্তি এসে নবী করীম (ছাঃ)-এর মাথার কাছে দাঁড়ালো এবং বলল, তোমাদের সাথী প্রত্যেক আরোহীকে অবদমিত করেছে বা আরোহীদেরকে অবদমিত করার সংকল্প করেছে এবং প্রত্যেক রাখালকে সমুন্নত করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার জুববার হাতা ধরে বললেন, আমি কি তোমাকে নির্বোধের পোষাক পরিহিত দেখছি না? অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর নবী হযরত নূহ (আঃ)-এর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে তিনি তাঁর পুত্রকে বলেন, আমি তোমাকে একটি উপদেশ দিচ্ছি। আমি তোমাকে দুটি বিষয়ের আদেশ দিচ্ছি এবং দুটি বিষয়ে নিষেধ করছি। আমি তোমাকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নির্দেশ দিচ্ছি। কেননা সাত আসমান ও সাত যমীনকে যদি এক পাল্লায় তোলা হয় এবং অপর পাল্লায় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তোলা হয়, তবে সেই তাওহীদের পাল্লাই ভারী হবে। সাত আসমান ও সাত যমীন যদি একটি জটিল গ্রন্থির রূপ ধারণ করে, তবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী তা চুরমার করে দিবে। কেননা তা প্রত্যেক বস্ত্তর ছালাত এবং সকলেই এর বদৌলতে রিযিক লাভ করে থাকে।

আর আমি তোমাকে বারণ করছি শিরক ও অহংকারে লিপ্ত হওয়া থেকে। আমি বললাম, অথবা বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! শিরক তো আমরা বুঝলাম, তবে অহংকার কি? আমাদের মধ্যকার কারো যদি কারুকার্য খচিত চাদর থাকে, আর তা পরিধান করে? তিনি বলেন, না। সে আবার বলল, যদি আমাদের কারো সুন্দর ফিতাযুক্ত সুন্দর একজোড়া জুতা থাকে? তিনি বললেন, না। সে পুনরায় বলল, যদি আমাদের কারো আরোহণের একটি জন্তু থাকে? তিনি বললেন, না। সে বলল, যদি আমাদের কারো বন্ধু-বান্ধব থাকে এবং তারা তার সাথে ওঠা-বসাও করে (তবে তা কি অহংকার হবে)? তিনি বললেন, না। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে অহংকার কি? তিনি বলেন, সত্য থেকে বিমুখ থাকা এবং মানুষকে হেয় জ্ঞান করা।[1]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামত দিবসে আমার উম্মতের একজনকে সমস্ত সৃষ্টির সামনে আলাদা করে এনে উপস্থিত করবেন। তিনি তার সামনে নিরানববইটি আমলনামার খাতা খুলে ধরবেন। প্রতিটি খাতা দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। তারপর তিনি প্রশ্ন করবেন, তুমি কি এগুলো হতে কোন একটি (গুনাহ) অস্বীকার করতে পার? আমার লেখক ফেরেশতারা কি তোমার উপর যুলুম করেছে? সে বলবে, না, হে প্রভু!

তিনি আবার প্রশ্ন করবেন, তোমার কোন অভিযোগ আছে কি? সে বলবে, না, হে আমার প্রভু! তিনি বলবেন, আমার নিকট তোমার একটি ছওয়াব আছে। আজ তোমার উপর এতটুকু যুলুমও করা হবে না। তখন ছোট একটি কাগজের টুকরা বের করা হবে। তাতে লিখা থাকবে, আমি সাক্ষ্য প্রদান করি যে, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোন প্রভু নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল

তিনি তাকে বলবেন, দাঁড়িপাল্লার সামনে যাও। সে বলবে, হে প্রভু! এতগুলো খাতার বিপরীতে এই সামান্য কাগজটুকুর কি আর ওযন হবে? তিনি বলবেন, তোমার উপর কোন রকম যুলুম করা হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তারপর খাতাগুলো এক পাল্লায় রাখা হবে এবং উক্ত টুকরাটি আরেক পাল্লায় রাখা হবে। ওযনে খাতাগুলোর পাল্লা হালকা হবে এবং কাগজের টুকরার পাল্লা ভারী হবে। আর আল্লাহ তাআলার নামের বিপরীতে কোন কিছুই ভারী হতে পারে না।[2]

২. সুবহাল্লাহ, আল-হামদুল্লিাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার বলা :

ঈমানদার ব্যক্তি নির্দিষ্ট পরিমাণে তাসবীহ, তাহলীল ও যিকর করলে পরকালে নেকীর পাল্লা ভারী হবে। এমর্মে হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم  كَلِمَتَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ، خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ، ثَقِيلَتَانِ فِى الْمِيزَانِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ.

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, দুটি কালিমাহ আছে, যেগুলো দয়াময়ের কাছে অতি প্রিয়, মুখে উচ্চারণ করা খুবই সহজ, দাঁড়িপাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (কালিমা দুটি হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী সুবহান্নাল্লাহিল আযীম। অর্থাঃ আমরা আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি, মহান আল্লাহ (যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে) অতি পবিত্র।[3]

আরেকটি হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى مَالِكٍ الأَشْعَرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الطُّهُوْرُ شَطْرُ الإِيْمَانِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلأُ الْمِيْزَانَ. وَسُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلآنِ أَوْ تَمْلأُ مَا بَيْنَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، আবূ মালিক আল-আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। আলহামদুলিল্লাহ দাঁড়িপাল্লাকে পূর্ণ করে দেয়। সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ একসাথে আকাশমন্ডলী ও যমীনের মধ্যবর্তী জায়গা ভর্তি করে দেয়।[4]

আরেকটি হাদীছে ইবনু আববাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জুওয়াইরিয়াহ (রাঃ)-এর কাছ থেকে বেরিয়ে এলেন। ইতিপূর্বে তার নাম ছিল বাররাহ। নবী করীম ছাঃ) তার এ নাম পরিবর্তন করেন। তিনি তার কাছ থেকে বেরিয়ে আসার সময়ও মুছাল্লায় বসে তাসবীহ পাঠ করতে দেখেন এবং ফিরে এসেও তাকে ঐ মুছাল্লায় বসে থাকতে দেখেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তখন থেকে একটানা এ মুছাল্লায় বসে আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসূল (ছাঃ) বললেন,لَقَدْ قُلْتُ بَعْدَكِ أَرْبَعَ كَلِمَاتٍ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ لَوْ وُزِنَتْ بِمَا قُلْتِ مُنْذُ الْيَوْمِ لَوَزَنَتْهُنَّ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ. তোমার কাছ থেকে যাওয়ার পর আমি তিনবার চারটি কালিমা পড়েছি; এ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তুমি যা কিছু পাঠ করেছ, উভয়টি ওযন করা হলে আমার ঐ চারটি কালেমা ওযনে ভারী হবে। তা হচ্ছে সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালক্বিহি, ওয়া রিযা নাফসিহি, ওয়া যিনাতা আরশিহি, ওয়া মিদাদা কালিমাতিহি। অর্থ- মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওযন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ।[5]

৩. উত্তম চরিত্র :

মানুষ উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে দুনিয়াতে যেমন সম্মানিত ও সমাদৃত হয়, পরকালেও তেমনি অশেষ ছওয়াবের অধিকারী হবে। আর এ বৈশিষ্ট্য তার নেকীর পাল্লাকে ভারী করবে। আবুদ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَا شَىْءٌ أَثْقَلُ فِىْ مِيزَانِ الْمُؤْمِنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ خُلُقٍ حَسَنٍ وَإِنَّ اللهَ لَيَبْغَضُ الْفَاحِشَ الْبَذِىءَ. ক্বিয়ামত দিবসে মুমিনের দাঁড়িপাল্লায় সচ্চরিত্র ও সদাচারের চেয়ে অধিক ওযনের আর কোন জিনিস হবে না। কেননা আল্লাহ তাআলা অশ্লীল ও কটুভাষীর প্রতি রাগান্বিত হন।[6]

আরেকটি হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقِيَ أَبَا ذَرٍّ، فَقَالَ: يَا أَبَا ذَرٍّ، أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى خَصْلَتَيْنِ هُمَا أَخَفُّ عَلَى الظَّهْرِ، وَأَثْقَلُ فِي الْمِيزَانِ مِنْ غَيْرِهِمَا؟ قَالَ: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: عَلَيْكَ بِحُسْنِ الْخُلُقِ، وَطُولِ الصَّمْتِ، وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، مَا عَمِلَ الْخَلَائِقُ بِمِثْلِهِمَا-

আনাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, হে আবূ যার! তোমাকে কি এমন দুটো স্বভাবের কথা বলব, যে স্বভাব দুটি পিঠে খুব হাল্কা; কিন্তু পাল্লায় অন্য দুটি অপেক্ষা খুব ভারী? আমি বললাম, বলুন। তিনি বললেন, দীর্ঘ নিরবতা ও উত্তম ব্যবহার। যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম! বান্দা এ দুটো কাজের মতো উত্তম আর কোন কাজ করে না।[7]

৪. জানাযা ও দাফনে অংশগ্রহণ করা :

মানুষ মারা গেলে তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা মুমিনের ছয়টি হকের অন্যতম। এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী বহু ছওয়াবের অধিকারী হয়। যা পরকালে তার নেকীর পাল্লাকে  ভারী করবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

مَنْ تَبِعَ جِنَازَةً حَتَّى يُصَلَّى عَلَيْهَا وَيُفْرَغَ مِنْهَا فَلَهُ قِيرَاطَانِ وَمَنْ تَبِعَهَا حَتَّى يُصَلَّى عَلَيْهَا فَلَهُ قِيرَاطٌ وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَهُوَ أَثْقَلُ فِى مِيزَانِهِ مِنْ أُحُدٍ.

যে ব্যক্তি জানাযার অনুগামী হয় এবং জানাযার ছালাত আদায় করে, অতঃপর দাফন করা পর্যন্ত জানাযার সাথে থাকে, তার জন্য দুক্বীরাত ছওয়াব রয়েছে। যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন, তাঁর কসম করে বলছি, এক ক্বীরাত হচ্ছে ওহোদ পাহাড় অপেক্ষা দাঁড়িপাল্লায় অধিক ভারী।[8] অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ شَهِدَ الْجَنَازَةَ حَتَّى يُصَلِّىَ عَلَيْهَا فَلَهُ قِيرَاطٌ، وَمَنْ شَهِدَ حَتَّى تُدْفَنَ كَانَ لَهُ قِيرَاطَانِ. قِيلَ وَمَا الْقِيرَاطَانِ قَالَ مِثْلُ الْجَبَلَيْنِ الْعَظِيمَيْنِ. যে ব্যক্তি মৃতের জন্য ছালাত আদায় করা পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক ক্বীরাত। আর যে ব্যক্তি মৃতের দাফন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে তার জন্য দুক্বীরাত। জিজ্ঞেস করা হল দুক্বীরাত কী? তিনি বললেন, দুটি বিশাল পর্বত সমতুল্য (ছওয়াব)।[9]

৫. আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়া প্রস্ত্তত রাখা :

আল্লাহর কালিমা তথা দ্বীনকে সমুন্নত করার জন্য অনেক সময় কাফির, মুশরিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। সেই জিহাদে ব্যবহারের জন্য যে ব্যক্তি ঘোড়া প্রস্ত্তত রাখে তার জন্য ছওয়াব রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنِ احْتَبَسَ فَرَسًا فِى سَبِيلِ اللهِ إِيْمَانًا بِاللهِ وَتَصْدِيقًا بِوَعْدِهِ، فَإِنَّ شِبَعَهُ وَرِيَّهُ وَرَوْثَهُ وَبَوْلَهُ فِى مِيزَانِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাঁর প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বাস রেখে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য ঘোড়া প্রস্ত্তত রাখে, ক্বিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তির পাল্লায় ঘোড়ার খাদ্য, পানীয়, গোবর ও পেশাব ওযন করা হবে।[10]

৬. ফরয ছালাতের পরে যিকর করা :

ফরয ছালাত শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অনেক দোআ, তাসবীহ ও যিকর পাঠ করতেন। যার ফযীলত ও গুরুত্ব অনেক। এগুলি পরকালে নেকীর পাল্লাকে ভারী করবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

خَصْلَتَانِ أَوْ خَلَّتَانِ لاَ يُحَافِظُ عَلَيْهِمَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ هُمَا يَسِيْرٌ وَمَنْ يَعْمَلُ بِهِمَا قَلِيْلٌ يُسَبِّحُ فِىْ دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ عَشْرًا وَيَحْمَدُ عَشْرًا وَيُكَبِّرُ عَشْرًا فَذَلِكَ خَمْسُوْنَ وَمِائَةٌ بِاللِّسَانِ وَأَلْفٌ وَخَمْسُ مِائَةٍ فِى الْمِيْزَانِ وَيُكَبِّرُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِيْنَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ وَيَحْمَدُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِيْنَ وَيُسَبِّحُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِيْنَ فَذَلِكَ مِائَةٌ بِاللِّسَانِ وَأَلْفٌ فِى الْمِيزَانِ. فَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعْقِدُهَا بِيَدِهِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ هُمَا يَسِيْرٌ وَمَنْ يَعْمَلُ بِهِمَا قَلِيْلٌ، قَالَ يَأْتِى أَحَدَكُمْ يَعْنِى الشَّيْطَانَ فِىْ مَنَامِهِ فَيُنَوِّمُهُ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَهُ وَيَأْتِيهِ فِى صَلاَتِهِ فَيُذَكِّرُهُ حَاجَةً قَبْلَ أَنْ يَقُولَهَا.

দুটি বিষয় বা দুটি অভ্যাসের প্রতি যে মুসলিম হেফাযত করবে সে নিশ্চয়ই জান্নাতে যাবে। অভ্যাস দুটি সহজ কিন্তু তা আমলকারীর সংখ্যা কম। তা হল (১) প্রত্যেক ছালাতের পর দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার আলহামদুলিল্লাহ ও দশবার আল্লাহু আকবার বলবে। মুখে (পাঁচ ওয়াক্ত) এর সংখ্যা একশত পঞ্চাশ। কিন্তু মীযানে তা এক হাযার পাঁচশত (২) যখন শয্যায় যাবে তখন চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবার, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ ও তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ বলবে। তা মুখে একশত। কিন্তু মীযানে এক হাযার। আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে তা হাতের আঙ্গুলে গণনা করতে দেখেছি। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অভ্যাস দুটি সহজ হওয়া সত্ত্বেও এর আমলকারীর সংখ্যা কম কেন? তিনি বললেন, তোমরা বিছানায় ঘুমাতে গেলে শয়তান তোমাদের কোন লোককে তা বলার আগেই ঘুম পাড়িয়ে দেয়। আর ছালাতের মধ্যে শয়তান এসে তার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং সে ঐগুলো বলার আগেই প্রয়োজনের দিকে চলে যায়।[11]

৭. সন্তানের মৃত্যুতে ধৈর্য ধারণ করা ও ছওয়াব কামনা করা :

দুনিয়াতে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি মানুষের সর্বাধিক প্রিয় বস্ত্ত। তাই ধন-সম্পদ নষ্ট হলে কিংবা সন্তান-সন্ততি মারা গেলে মানুষ ভেঙে পড়ে। অনেক সময় দিশাহারা হয়ে যায়। কিন্তু মুমিন সকল বিপদ-মুছীবতে আল্লাহর উপরে ভরসা রাখে। বিপদকে সে গোনাহ মাফের মাধ্যম হিসাবে কল্যাণকর জ্ঞান করে। তেমনি সন্তানের মৃত্যুতেও ধৈর্য ধারণ করে। আর এর ফলে সে অশেষ ছওয়াবের অধিকারী হয় এবং তার নেকীর পাল্লা ভারী হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,بَخٍ بَخٍ لِخَمْسٍ مَا أَثْقَلَهُنَّ فِى الْمِيْزَانِ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ وَسُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَالْوَلَدُ الصَّالِحُ يُتَوَفَّى فَيَحْتَسِبُهُ وَالِدُهُ، পাঁচটি জিনিসের জন্য বাহঃ বাহঃ। যা দাঁড়িপাল্লায় অধিক ভারী হবে। তাহল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ (বলা) এবং সৎ সন্তানের মৃত্যুর পরে পিতার ছওয়াব কামনা করা।[12]

যেসব আমল পরকালে দাঁড়িপাল্লাকে হালকা করে

১. রিয়া বা লৌকিকতা :

মানুষ আমল করবে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কিন্তু কেউ অন্যকে দেখানোর বা শুনানোর জন্য কোন আমল করলে, সে আমল আল্লাহ কবুল করবেন না। এর কারণে পরকালে শাস্তি পেতে হবে। হাদীছে এসেছে,

عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الأَصْغَرُ. قَالُوْا وَمَا الشِّرْكُ الأَصْغَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الرِّيَاءُ يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِذَا جُزِىَ النَّاسُ بِأَعْمَالِهِمْ اذْهَبُوا إِلَى الَّذِيْنَ كُنْتُمْ تُرَاءُوْنَ فِى الدُّنْيَا فَانْظُرُوْا هَلْ تَجِدُوْنَ عِنْدَهُمْ جَزَاءً.

মাহমূদ বিন লাবীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের উপর আমার সবচেয়ে অধিক যে জিনিসের ভয় হয় তাহল ছোট শিরক। ছাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! ছোট শিরক কী জিনিস? উত্তরে তিনি বললেন, রিয়া (লোকপ্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আমল)। আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা যখন (ক্বিয়ামতে) লোকেদের আমলসমূহের বদলা দান করবেন তখন সকলের উদ্দেশ্যে বলবেন, তোমরা তাদের নিকট যাও, যাদেরকে প্রদর্শন করে দুনিয়াতে তোমরা আমল করেছিলে। অতঃপর দেখ, তাদের নিকট কোন প্রতিদান পাও কি-না।[13]

২. আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করা :

মহান আল্লাহ মানুষের জন্য দুনিয়াতে চলার জন্য কিছু বিধান দিয়েছেন। এ বিধান পালন করা মানুষের জন্য যরূরী। আল্লাহর বিধান লংঘন করা বড় গোনাহ। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,لأَعْلَمَنَّ أَقْوَامًا مِنْ أُمَّتِىْ يَأْتُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِحَسَنَاتٍ أَمْثَالِ جِبَالِ تِهَامَةَ بِيضًا فَيَجْعَلُهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ هَبَاءً مَنْثُورًا. قَالَ ثَوْبَانُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا جَلِّهِمْ لَنَا أَنْ لاَ نَكُونَ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لاَ نَعْلَمُ. قَالَ : أَمَا إِنَّهُمْ إِخْوَانُكُمْ وَمِنْ جِلْدَتِكُمْ وَيَأْخُذُونَ مِنَ اللَّيْلِ كَمَا تَأْخُذُونَ وَلَكِنَّهُمْ أَقْوَامٌ إِذَا خَلَوْا بِمَحَارِمِ اللهِ انْتَهَكُوهَا.  আমি আমার উম্মাতের কতক দল সম্পর্কে অবশ্যই জানি, যারা ক্বিয়ামতের দিন তিহামার শুভ্র পর্বতমালার সমতুল্য নেক আমলসহ উপস্থিত হবে। মহামহিম আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবেন। ছাওবান (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের পরিচয় পরিষ্কারভাবে আমাদের নিকট বর্ণনা করুন, যাতে অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই। তিনি বলেন, তারা তোমাদেরই ভ্রাতৃগোষ্ঠী এবং তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা রাতের বেলা তোমাদের মতই ইবাদত করবে। কিন্তু তারা এমন লোক যে, একান্ত গোপনে আল্লাহর হারামকৃত বিষয়ে লিপ্ত হবে।[14]

৩. মানুষের প্রতি যুলুম করা, গালি দেওয়া, গীবত করা ও মারধর করা :

মানুষের প্রতি যুলুম করা, গালি-গালাজ করা ও গীবত করা এবং অন্যায়ভাবে মারধর করা বড় গোনাহ। পরকালে এর প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে নেকী দিয়ে। ফলে  তখন নেকীর পাল্লা হালাকা হয়ে যাবে। হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلاً قَعَدَ بَيْنَ يَدَىِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ لِى مَمْلُوكَيْنِ يُكْذِبُونَنِى وَيَخُونُونَنِى وَيَعْصُونَنِى وَأَشْتُمُهُمْ وَأَضْرِبُهُمْ فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ قَالَ  يُحْسَبُ مَا خَانُوكَ وَعَصَوْكَ وَكَذَبُوكَ وَعِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ بِقَدْرِ ذُنُوبِهِمْ كَانَ كَفَافًا لاَ لَكَ وَلاَ عَلَيْكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ دُونَ ذُنُوبِهِمْ كَانَ فَضْلاً لَكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَوْقَ ذُنُوبِهِمُ اقْتُصَّ لَهُمْ مِنْكَ الْفَضْلُ. قَالَ فَتَنَحَّى الرَّجُلُ فَجَعَلَ يَبْكِى وَيَهْتِفُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا تَقْرَأُ كِتَابَ اللهِ (وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلاَ تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ) الآيَةَ. فَقَالَ الرَّجُلُ وَاللهِ يَا رَسُولَ اللهِ مَا أَجِدُ لِى وَلِهَؤُلاَءِ شَيْئًا خَيْرًا مِنْ مُفَارَقَتِهِمْ أُشْهِدُكُمْ أَنَّهُمْ أَحْرَارٌ كُلَّهُمْ.

আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আছে, নবী করীম (ছাঃ)-এর সম্মুখে বসে এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার কয়েকটি গোলাম আছে। আমার নিকট এরা মিথ্যা কথা বলে, আমার সম্পদে ক্ষতিসাধন (খিয়ানত) করে এবং আমার অবাধ্যতা করে। এ কারণে তাদেরকে আমি বকাবকি ও মারধর করি। তাদের সাথে এমন ব্যবহারে আমার অবস্থা কি হবে? তিনি বললেন, তারা যে তোমার সাথে খিয়ানত করে, তোমার অবাধ্যতা করে এবং তোমার নিকট মিথ্যা বলে, আর এ কারণে তাদের সাথে তুমি যেমন আচরণ কর- এ সবেরই হিসাব-নিকাশ হবে। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাদের অপরাধের সমান হয়, তবে ঠিক আছে। তোমারও কোন অসুবিধা হবে না, তাদেরও কোন অসুবিধা হবে না। যদি তোমার দেয়া শাস্তি তাদের অপরাধের তুলনায় কম হয়, তাহলে তোমার জন্য অতিরিক্ত (ছওয়াব) রয়ে গেল। আর তোমার প্রদত্ত শাস্তি যদি তাদের অপরাধের তুলনায় বেশী হয়, তাহলে অতিরিক্ত অংশের জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।

বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে লোকটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে আলাদা হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ তাআলার কিতাবে তুমি কি এ কথা পড় নাই যে, আমরা ক্বিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করব। সুতরাং কোন লোকের উপর কোন যুলুম করা হবে না। কারো বিন্দু পরিমাণও কিছু কৃতকর্ম থাকলে আমরা তাও হাযির করব। আর হিসাব সম্পন্ন করার জন্য আমরাই যথেষ্ট (আম্বিয়া ২১/৪৭)। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কসম! তাদের মাঝে এবং আমার মাঝে বিচ্ছিন্নতা ছাড়া আমার ও তাদের কল্যাণের আর কোন পথ দেখছি না। আপনাকে আমি সাক্ষী রেখে বলছি, তাদের সবাই এখন হতে মুক্ত।[15]

রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন,أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ. قَالُوا الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ وَلاَ مَتَاعَ. فَقَالَ إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِى يَأْتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَةٍ وَصِيَامٍ وَزَكَاةٍ وَيَأْتِى قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا وَأَكَلَ مَالَ هَذَا وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْضَى مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِى النَّارِ তোমরা কি জান, নিঃস্ব কে? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের মধ্যে নিঃস্ব হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোন সম্পদও নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে নিঃস্ব যে ক্বিয়ামত দিবসে ছালাত, ছিয়াম, যাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সাথে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার সৎ আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের  গুনাহ সমূহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।[16] পরিশেষে বলব, যেসব আমলের মাধ্যমে পরকালীন জীবনে নেকীর পাল্লা ভারী হবে সেগুলো বেশী বেশী সম্পাদন করে জান্নাতের পথ সুগম করা প্রতিটি মুসলমানের অবশ্য করণীয়। পক্ষান্তরে যেসব আমল নেকীর পাল্লা হালকা করবে এবং গোনাহের পাল্লা ভারী করবে সেগুলো থেকে বিরত থেকে নাজাতের পথ সুগম করা মুমিনের কর্তব্য। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!

 ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম

[1]. আহমাদ হা/৬৫৮৩, ৭১০১; হাকিম হা/১৫৪; ছহীহাহ হা/৬২৯৫।

[2]. তিরমিযী হা/২৬৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৪৩০০; মিশকাত হা/৫৫৫৯; ছহীহাহ হা/২৫৬৩।

[3]. বুখারী হা/৭৫৬৩, ৬৪০৬; মুসলিম হা/২৬৯৪; মিশকাত হা/২২৯৮।

[4]. মুসলিম হা/২২৩; তিরমিযী হা/৩৫১৭; ইবনু মাজাহ হা/২৮০।

[5]. মুসলিম হা/২৭২৬, দোআ ও যিকর অধ্যায়, দিনের প্রথম প্রহরে তাসবীহ পাঠ, অনুচ্ছেদ; তিরমিযী হা/৩৫৫৫; নাসাঈ হা/১৩৫১; ইবনু মাজাহ হা/৩৮০৮।

[6]. তিরমিযী হা/২০০২; ছহীহাহ হা/৮৭৬।

[7]. বায়হাক্বী, শুআবুল ঈমান; মিশকাত হা/৪৮৬৭; ছহীহাহ হা/১৯৩৮, সনদ হাসান।

[8]. আহমাদ; ছহীহুল জামে হা/৬১৩৫।

[9]. বুখারী হা/১৩২৫, ৪৭; মুসলিম হা/৯৪৫।

[10]. বুখারী হা/২৮৫৩; নাসাঈ হা/৩৫৮২; মিশকাত হা/৩৮৬৮।

[11]. আবূদাঊদ হা/৫০৬৫; মিশকাত হা/২৩০৬।

[12]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৮১০১; ছহীহাহ হা/১২০৪; ছহীহুল জামে হা/২৮১৭।

[13]. আহমাদ হা/২৩৬৮০; ছহীহ তারগীব হা/২৯; ছহীহাহ হা/৯৫১।

[14]. ইবনু মাজাহ হা/৪২৪৫; আত-তালীকুর রাগীব ৩/১৭৮; ছহীহাহ হা/৫০৫।

[15]. তিরমিযী হা/৩১৬৫; মিশকাত হা/৫৫৬১; ছহীহ আত-তারগীব হা/২২৯০।

[16]. মুসলিম হা/২৫৮১; তিরমিযী হা/২৪১৮; ছহীহাহ হা/৮৪৫।

No comments

Featured Post

আরাফার ময়দানের শ্রেষ্ঠ দোয়া The best dua of Araf Maidan

আরাফাতের দিনের শ্রেষ্ঠ দোয়া জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে বলা হয় ইওয়ামে আরাফা বা আরাফা দিবস। এ দিন আরাফার ময়দানে অবস্থান কর...

Powered by Blogger.