ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কাউকে গালি দিলে কী করবেন?


কাউকে গালি দেওয়া গুনাহের কাজ। কেউ যদি কাউকে ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় গালি দেয় তবে তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন নবিজি। যাকে গালি দেওয়া হলো, তার জন্য কী দোয়া করবেন? সম্পর্কে হাদিসে কী এসেছে?

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই ব্যক্তির জন্য এভাবে দোয়া করতে বলেছেন- ‘হে আল্লাহ! আমি যাকে কষ্ট দিয়েছি, সে কষ্ট তার আত্মশুদ্ধির উপায় এবং তার জন্য রহমতে পরিণত করুন।হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা এভাবে এসেছে-

. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন দুইজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এলো। তারা তার সঙ্গে কোনো বিষয়ে আলোচনা করলো। তা কী ছিল, আমি জানি না। এরপর তারা তাকে রাগাম্বিত করেছিল। তিনি তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করলেন এবং তিরস্কার করলেন। যখন তারা বের হয়ে গেল আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যারা (আপনার কাছ থেকে) কল্যাণ লাভ করে। এরা দুইজনে তার কিছুই পাবে না। তিনি বললেন, সে কী ব্যাপার! তিনি (আয়েশা) বললেন, আপনি তো তাদের উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন এবং ধিক্কার দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কি জান আমার প্রতিপালকের সঙ্গে বিষয়ে আমি কী শর্তারোপ করেছি? আমি বলেছিলাম-

 اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّ الْمُسْلِمِينَ لَعَنْتُهُ أَوْ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْهُ لَهُ زَكَاةً وَأَجْرًا

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নামা আনা বাশারুন ফাআইয়্যুল মুসলিমিনা লাআনতুহু আও সাবাবতুহু ফাঝআলহু লাহু জাকাতান ওয়া আঝরান।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ মাত্র। সুতরাং আমি কোনো মুসলিমকে গালি বা অভিশাপ দিয়ে থাকলে সেটাকে তুমি তার জন্য (গোনাহ থেকে) পবিত্র করার মাধ্যম বানিয়ে দাও এবং তাকে তার (উত্তম) বিনিময় দান কর।’ (মুসলিম ২৬০০)

. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দোয়া করতে শুনেছেন-

اللَّهُمَّ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْ ذَلِكَ لَهُ قُرْبَةً إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

হে আল্লাহ! যদি আমি কোনো মুমিন ব্যক্তিকে খারাপ (মন্দ কথা) বলে থাকি, তবে আপনি সেটাকে কেয়ামাতের দিন তার জন্য আপনার নৈকট্য অর্জনের উপায় বানিয়ে দিন।’ (বুখারি ৬৩৬১)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব সময় দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। কেননা ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেকেই মানুষকে মন্দ বা খারাপ কথা বলে থাকেন। আর কথাগুলোর বিনিময় যেন ওই ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য পেয়ে যান। পাশাপাশি নিজের মন্দ কথার গোনাহ থেকেও মুক্তি পান।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের শেখানো দোয়াটি বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের আমলে জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ আপডেট পেতে google news  আমাদেরকে ফলো করুন

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMN_Czwswjt7mAw

No comments

Featured Post

দোয়া-ই নুর- Doya e Nur

Powered by Blogger.