অজুর সময় যেসব দোয়া পড়বেন

অজু করা ইবাদত। অনেক ইবাদতের জন্য অজু করা ফরজ। সব সময় অজু অবস্থায় থাকা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দায়েমি সুন্নাতও বটে। হাদিসের বর্ণনা মতে অজুর শুরু শেষে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ একাধিক দোয়া।

তাছাড়া নামাজ, হজ কুরআন তেলাওয়াতসহ অনেক ইবাদতের জন্যই কুরআনুল কারিমে অজু তথা পবিত্রতা অর্জনের অনেক নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও আর টাখনুসহ উভয় পা ধোও। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা শরীর পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রোগী হও, অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস কর; অতপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মণ্ডল উভয় হাত মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত )

অজু করার শুরুতে, অজু করার সময় এবং শেষে ৪টি দোয়া পড়ার জন্য হাদিসের নির্দেশনা রয়েছে। এতে অনেক ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো হলো-

> অজুর শুরুতেবিসমিল্লাহবলা-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অর্থ : পরম করুনাময় দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

> অজু করার সময় দোয়াটি পড়তে থাকা-
اَللَّخُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ رِزْقِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি। (নাসাঈ)
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।

> অজুর শেষে কালেমার সাক্ষ্য উপকারিতা
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা রাসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)

উপকারিতা : হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে; ওই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)

> অতপর দোয়াটি পড়া-
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ التَّوَّابِينَ ، وَاجْعَلْنِي مِنْ الْمُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্হিরিন।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উল্লেখিত দোয়াগুলো অনেক ফজিলত পূর্ণ। যা অজুকারীকে পবিত্র নেককার বান্দায় পরিণত করে দেয়। যার জন্য জান্নাতের সব দরজা উন্মুক্ত থাকে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, একান্ত মনোযোগের সঙ্গে সুন্নাতের অনুসরণে সব সময় অজু অবস্থায় থাকা। অজুর ফজিলত লাভে যথাযথভাবে অজু করা। হাদিসে ঘোষিত অজুর ফজিলত উপকারিতাগুলো অর্জন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় অজু অবস্থায় থাকার তাওফিক দান করুন। পবিত্রতা অবলম্বনকারী তাওবাহকারী হিসেবে কবুল করুন। দুনিয়াতে উত্তম রিজিক, মৃত্যুর আগে গোনাহ মাফ এবং পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

No comments

Featured Post

চাকরি লাভের আমল, রিজিকে বরকত লাভের দোয়া

রিজিকে বরকত লাভে যেভাবে দোয়া করেছেন ঈসা ( আ .)

Powered by Blogger.