সেহরি খাওয়া কী?
রোজার জন্য শেষ রাতে সেহরি খেতে হয়। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের শেষভাগে সেহরি খেতে বলেছেন। তা পরিমাণে অল্প হলেও খাওয়া। কিন্তু রোজার জন্য সেহরি খাওয়া কী?
রোজার জন্য সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। যে ব্যক্তি তা ইচ্ছাকৃত না খায়, এ জন্য সে গুনাহগার হবে না। এ কারণে যদি কেউ ফজরের পর জাগে এবং সেহরি খাওয়ার সময় না পায়, তাহলে তার জন্য রোজা রেখে নেওয়া জরুরি। এতে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
বরং ক্ষতি হবে তখন, যখন সে কিছু খেতে হয় মনে করে তখনই (ফজরের পর) কিছু খেয়ে ফেলে। সে ক্ষেত্রে তাকে সারাদিন পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে এবং রমজানের পরে এ দিনের রোজা কাজা করতে হবে।
রোজার জন্য সেহরি খাওয়া উত্তম। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উম্মতকে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে সেহরি খাওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি সেহরিকে বরকতময় খাদ্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা সেহরি খাও। কারণ, সেহরিতে বরকত আছে।’ (বুখারি ১৮২৩, মুসলিম ১০৯৫)
নবিজি আরও বললেন, ‘তোমরা সেহরি খেতে অভ্যাসী হও। কারণ, সেহরিই হল বরকতময় খাদ্য।’ (মুসনাদে আহমাদ, নাসাঈ)
হজরত ইরবায বিন সারিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন রমজানে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে সেহরি খেতে ডাকলেন; বললেন, ‘বরকতময় খানার দিকে এস।’ (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে হিববান, ইবনে খুযাইমা)
সেহরিতে বরকত থাকার মানে হল, সেহরি রোজাদারকে সবল রাখে এবং রোজার কষ্ট তার জন্য হাল্কা করে। আর এটা হল শারীরিক বরকত। পক্ষান্তরে শরয়ি বরকত হলো, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ পালন এবং তাঁর অনুসরণ।’
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই সেহরির গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে তা দিয়ে মুসলিম ও আহলে কিতাব (ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের) রোজার মাঝে পার্থক্য চিহ্নিত করেছেন। তিনি অন্যান্য ব্যাপারে তাদের বিরোধিতা করার মত তাতেও বিরোধিতা করতে মুসলিম উম্মাহকে আদেশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মাঝে পার্থক্য হল সেহরি খাওয়া।’ (মুসলিম ১০৯৬, আবু দাউদ ২৩৪৩)
No comments