কুরআন-হাদিসে ইসতেগফারের নির্দেশ ও ফজিলত

আল্লাহ তাআলাকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে অন্তর দিয়ে স্মরণ করার অন্যতম মাধ্যম হলো ইসতেগফার। কারণে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১০৬)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তুমি ক্ষমা চাও তোমার এবং মুমিন নর-নারীর ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য।’ (সুরা মুহাম্মদ : আায়ত ১৯)

সুরা নসরের ৩নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন তুমি তোমার রবের প্রশংসা তাসবিহ পাঠ কর এবং তার কাছে ক্ষমা চাও নিশ্চয় তিনি তাওবা কবুলকারী।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও দৈনিক একশত বার ইসতেগফার করতেন। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমরা এক মজলিশে গণনা করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একশত বার বলতেন-

উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি; ওয়া তুব আলাইয়্যা; ইন্নাকা আংতাত তাউয়্যাবুর রাহিম।
অর্থ : হে আমার রব! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার তাওবা কবুল কর; নিশ্চয় তুমি তাওবা কবুলকারী দয়াশীল।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)

ইসতেগফার আল্লাহ তাআলার ইবাদত তথা জিকির। ইসতেগফারের মাধ্যমে মানুষের গোনাহ মাফ হয়; বৃষ্টি বর্ষিত হয়; রিজিক বৃদ্ধি পায়; সন্তান সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয়; সর্বোপরি ইসতেগফারের মাধ্যমে মহাপুরস্কার জান্নাত অর্জিত হয়।

আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘সুতরাং বলেছি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয় তিনি মহাক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন। তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ সন্তান-সন্তুতি দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন জান্নাত তথা বহু বাগান প্রবাহিত করবেন নদ-নদী। (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)

পরিশেষে...
ইসতেগফার যেহেতু সর্বোত্তম জিকির ইবাদত। সুতরাং ইসতেগফারের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা প্রতিটি মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। ইসতেগফারকারীকে আল্লাহ তাআলা ভালোবাসেন।

এক্ষেত্রে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণিত হাদিসটি মানুষকে বেশি বেশি ইসতেগফারের প্রতি উৎসাহিত করে। আর তাহলো-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সে সত্বার শপথ! যার হাতে আমার জীবন; যদি তোমরা গোনাহ না কর তবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের নিয়ে যাবেন এবং এমন এক সম্প্রদায় নিয়ে আসবেন; যারা গোনাহ করবে এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম)

মুসলিম উম্মাহর উচিত কুরআনের আয়াতের উপর যথাযথ আমল করা। আর তাহলো-
আর যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি জুলুম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে; সে আল্লাহকে পাবে ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১১০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসতেগফার সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন। ইসতেগফারের নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ঘোষিত ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

No comments

Featured Post

দোয়া-ই নুর- Doya e Nur

Powered by Blogger.