মুমিন কিভাবে দিন অতিবাহিত করবে (২)
পূর্বের অংশ: মুমিন কিভাবে দিন অতিবাহিত করবে (১)
৮. আছর ছালাত আদায় করা
:
বস্ত্তর মূল ছায়ার এক
গুণ হওয়ার পর হ’তে
আছরের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং দু’গুণ হ’লে শেষ হয়। তবে
সূর্যাস্তের প্রাক্কালের রক্তিম সময় পর্যন্ত আছর পড়া জায়েয আছে।[1]
ক. ফরযের পূর্বে সুন্নাত ছালাত আদায় করা : আছরের পূর্বে দুই বা চার রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,يُصَلِّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ ‘নবী করীম (ছাঃ) আছরের (ফরয ছালাতের) পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন’।[2] অন্য হাদীছে এসেছে,كَانَ يُصَلِّى قَبْلَ الْعَصْرِ رَكْعَتَيْنِ- ‘তিনি আছরের (ফরয ছালাতের) পূর্বে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন’।[3] অন্যত্র তিনি বলেন, مَنْ فَاتَتْهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ فَكَأَنَّمَا وُتِرَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ ‘যে ব্যক্তির আছরের ছালাত ছুটে গেল, তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ যেন ছিনতাই হয়ে গেল’।[4]
খ. আছরের ফরয ছালাত
: আছরের ছালাত আদায়ের ব্যাপারে মহান আল্লাহ
বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,حَافِظُوْا عَلَى
الصَّلَوَاتِ
وَالصَّلاَةِ
الْوُسْطَى
وَقُوْمُوْا
لِلَّهِ
قَانِتِيْنَ-
‘তোমরা
ছালাত সমূহ ও মধ্যবর্তী ছালাতের ব্যাপারে যত্নবান হও এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে
বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। মধ্যবর্তী ছালাত বলতে আছর ছালাতকে
বুঝানো হয়েছে।[5]
আছর ছালাত ছেড়ে দেওয়া
অত্যন্ত গোনাহের কাজ, যার ফলে আমল বিনষ্ট হয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ
تَرَكَ
صَلاَةَ
الْعَصْرِ
فَقَدْ
حَبِطَ
عَمَلُهُ-
‘যে
ব্যক্তি আছরের ছালাত ছেড়ে দেয়, তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়’।[6]
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আছর ছালাত
পরিত্যাগ করে তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়’।[7]
৯. জুম‘আর
ছালাত আদায় করা :
জুম‘আর
ছালাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছালাত থেকে অলসতাকারীদের ঘর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।[8] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,لَيَنْتَهِيَنَّ
أَقْوَامٌ
عَنْ
وَدْعِهِمُ
الْجُمُعَاتِ
أَوْ
لَيَخْتِمَنَّ
اللهُ
عَلَى
قُلُوْبِهِمْ
ثُمَّ
لَيَكُوْنُنَّ
مِنَ
الْغَافِلِيْنَ-
‘অবশ্যই
মানুষ জুম‘আ
পরিত্যাগকারী হওয়া থেকে বিরত হবে, অথবা তাদের হৃদয়ে আল্লাহ মোহর মেরে দেন। অতঃপর
তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়’।[9] তিনি আরও বলেন,مَنْ
تَرَكَ
الْجُمُعَةَ
ثَلاَثَ
جُمَعٍ
مُتَوَالِيَاتٍ
فَقَدْ
نَبَذَ
الْإِسْلاَمَ
وَرَاءَ
ظَهْرِهِ،
‘যে
ব্যক্তি অবহেলা করে পরপর তিন জুম‘আ পরিত্যাগ করল, সে ব্যক্তি ইসলামকে
পশ্চাতে নিক্ষেপ করল’।[10] অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ
تَرَكَ
ثَلاَثَ
جُمَعٍ
تَهَاوُنًا
بِهَا
طَبَعَ
اللهُ
عَلَى
قَلْبِهِ،
‘যে
ব্যক্তি বিনা ওযরে তিন জুম‘আ পরিত্যাগ করল, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর
মেরে দেন’।[11]
অন্য বর্ণনায় এসেছে,مَنْ تَرَكَ ثَلاَثَ
جُمُعَاتٍ
مِنْ
غَيْرِ
عُذْرٍ
كُتِبَ
مِنَ
الْمُنَافِقِيْنَ-
‘যে
ব্যক্তি বিনা ওযরে তিন জুম‘আ পরিত্যাগ করল, তাকে মুনাফিকদের
তালিকাভুক্ত করা হবে।[12] অন্যত্র বলা হয়েছে যে, ‘সে মুনাফিক’।[13]
জুম‘আর
ছালাতের ফযীলত :
জুম‘আর
দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মহিমান্বিত। এইদিন নিকটবর্তী
ফেরেশতাগণ, আসমান-যমীন, বায়ু, পাহাড়-পর্বত ও সমুদ্র সবই ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে
ভীত থাকে’।[14]
জুম‘আর
রাতে বা দিনে কোন মুসলিম মারা গেলে আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হ’তে
রক্ষা করেন’।[15]
এ দিন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়। এ দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ
দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিনে তাঁর তওবা কবুল হয় এবং এদিনেই
তাঁর মৃত্যু হয়। এদিনেই শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে ও ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। এদিনে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রতি অধিক হারে দরূদ পাঠ করতে হয়।[16]
এ দিনে ইমামের মিম্বরে
আরোহন করা হ’তে
জামা‘আতে
ছালাত শেষে সালাম ফিরানোর মধ্যবর্তী সময়ে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন বান্দার যেকোন
বৈধ দো‘আ
আল্লাহ কবুল করেন।[17] দো‘আ কবুলের এই সময়টির মর্যাদা লায়লাতুল
ক্বদরের মত বলে হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জুম‘আর
পূর্ণ দিনটিই ইবাদতের দিন। অন্য হাদীছ অনুযায়ী ঐদিন আছর ছালাতের পর হ’তে
সূর্যাস্ত পর্যন্ত দো‘আ কবুল হয়।[18] অতএব জুম‘আর
সমস্ত দিন দো‘আ-দরূদ,
তাসবীহ-তাহলীল, যিকর-তেলাওয়াত ও ইবাদতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করা উচিত।[19] উক্ত
সময়ে খত্বীব স্বীয় খুৎবায় এবং ইমাম ও মুক্তাদীগণ স্ব স্ব সিজদায় ও শেষ বৈঠকে
তাশাহ্হুদ ও দরূদের পরে সালামের পূর্বে আল্লাহর নিকটে প্রাণ খুলে দো‘আ
করবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই সময়ে বেশী বেশী দো‘আ
করতেন।[20]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন,لاَ
يَغْتَسِلُ
رَجُلٌ
يَوْمَ
الْجُمُعَةِ،
وَيَتَطَهَّرُ
مَا
اسْتَطَاعَ
مِنْ
طُهْرٍ،
وَيَدَّهِنُ
مِنْ
دُهْنِهِ،
أَوْ
يَمَسُّ
مِنْ
طِيْبِ
بَيْتِهِ
ثُمَّ
يَخْرُجُ،
فَلاَ
يُفَرِّقُ
بَيْنَ
اثْنَيْنِ،
ثُمَّ
يُصَلِّى
مَا
كُتِبَ
لَهُ،
ثُمَّ
يُنْصِتُ
إِذَا
تَكَلَّمَ
الإِمَامُ،
إِلاَّ
غُفِرَ
لَهُ
مَا
بَيْنَهُ
وَبَيْنَ
الْجُمُعَةِ
الأُخْرَى-
‘যে
ব্যক্তি জুম‘আর
দিন গোসল করে সাধ্যমত পবিত্র হয়ে তেল ও সুগন্ধি মেখে মসজিদে এল, দু’জনের
মাঝে ফাঁকা করল না এবং সাধ্যমত নফল ছালাত আদায় করল। অতঃপর চুপচাপ ইমামের খুৎবা
শ্রবণ করল ও জামা‘আতে ছালাত আদায় করল, তার পরবর্তী জুম‘আ
পর্যন্ত এবং আরও তিনদিনের গোনাহ মাফ করা হয়’।[21]
তিনি আরও বলেন,مَنْ
غَسَّلَ
يَوْمَ
الْجُمُعَةِ
وَاغْتَسَلَ
وَبَكَّرَ
وَابْتَكَرَ
وَمَشَى
وَلَمْ
يَرْكَبْ
وَدَنَا
مِنَ
الإِمَامِ
فَاسْتَمَعَ
وَلَمْ
يَلْغُ
كَانَ
لَهُ
بِكُلِّ
خَطْوَةٍ
عَمَلُ
سَنَةٍ
أَجْرُ
صِيَامِهَا
وَقِيَامِهَا-
‘যে
ব্যক্তি জুম‘আর
দিন ভালভাবে গোসল করে। অতঃপর সকাল সকাল মসজিদে যায় পায়ে হেঁটে, গাড়ীতে নয় এবং
ইমামের কাছাকাছি বসে ও মনোযোগ দিয়ে খুৎবার শুরু থেকে শুনে এবং অনর্থক কিছু করে না,
তার প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের অর্থাৎ দিনের ছিয়াম ও রাতের বেলায়
নফল ছালাতের সমান নেকী হয়’।[22]
ক. আগেভাগে মসজিদে গমন
: জুম‘আর দিনে আগেভাগে মসজিদে
গমন করা অতি ফযীলতপূর্ণ কাজ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا كَانَ
يَوْمُ
الْجُمُعَةِ،
وَقَفَتِ
الْمَلاَئِكَةُ
عَلَى
بَابِ
الْمَسْجِدِ
يَكْتُبُوْنَ
الأَوَّلَ
فَالأَوَّلَ،
وَمَثَلُ
الْمُهَجِّرِ
كَمَثَلِ
الَّذِى
يُهْدِى
بَدَنَةً،
ثُمَّ
كَالَّذِى
يُهْدِى
بَقَرَةً،
ثُمَّ
كَبْشًا،
ثُمَّ
دَجَاجَةً،
ثُمَّ
بَيْضَةً،
فَإِذَا
خَرَجَ
الإِمَامُ
طَوَوْا
صُحُفَهُمْ،
وَيَسْتَمِعُوْنَ
الذِّكْرَ-
‘জুম‘আর
দিন ফেরেশতাগণ মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন ও মুছল্লীদের একের পর এক (নেকী) লিখতে
থাকেন। এদিন সকাল সকাল যারা আসে, তারা উট কুরবানীর সমান নেকী পায়। তার পরবর্তীগণ
গরু কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ ছাগল কুরবানীর, তার পরবর্তীগণ মুরগী কুরবানীর
(আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দান করার) ও তার পরবর্তীগণ ডিম কুরবানীর সমান নেকী
পায়। অতঃপর খত্বীব দাঁড়িয়ে গেলে ফেরেশতাগণ দফতর গুটিয়ে নেন ও খুৎবা শুনতে থাকেন’।[23]
খ. খুৎবার পূর্বে
সাধ্যমত সুন্নাত আদায় করা : মসজিদে প্রবেশের
পর তাহিয়াতুল মসজিদ ছালাত আদায়ের পর ইমাম খুৎবার জন্য মিম্বরে ওঠার পূর্ব পর্যন্ত
সাধ্যমত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنِ
اغْتَسَلَ
ثُمَّ
أَتَى
الْجُمُعَةَ
فَصَلَّى
مَا
قُدِّرَ
لَهُ
ثُمَّ
أَنْصَتَ
حَتَّى
يَفْرُغَ
مِنْ
خُطْبَتِهِ
ثُمَّ
يُصَلِّىَ
مَعَهُ
غُفِرَ
لَهُ
مَا
بَيْنَهُ
وَبَيْنَ
الْجُمُعَةِ
الأُخْرَى
وَفَضْلَ
ثَلاَثَةِ
أَيَّامٍ-
‘যে
ব্যক্তি গোসল করে জুম‘আর ছালাতে আসল, অতঃপর সাধ্যমত (সুন্নাত)
ছালাত আদায় করল, অতঃপর ইমামের খুৎবা শেষ হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকল, অতঃপর ইমামের
সাথে (জুম‘আর)
ছালাত আদায় করল, এতে তার দু’জুম‘আর মধ্যকার দিনসমূহের
এবং আরো তিন দিনের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়’।[24]
গ. মনোযোগ সহকারে খুৎবা
শ্রবণ করা : জুম‘আর দিনে ওযূ করে মসজিদে
এসে সুন্নাত ছালাত আদায়ের পর মনোযোগ সহকারে খুৎবা শ্রবণ করা যরূরী। রাসূল (ছাঃ)
বলেন,مَنْ
تَوَضَّأَ
فَأَحْسَنَ
الْوُضُوءَ
ثُمَّ
أَتَى
الْجُمُعَةَ
فَاسْتَمَعَ
وَأَنْصَتَ
غُفِرَ
لَهُ
مَا
بَيْنَهُ
وَبَيْنَ
الْجُمُعَةِ
وَزِيَادَةُ
ثَلاَثَةِ
أَيَّامٍ-
‘যে
ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করে জুম‘আয় আসে এবং মনোযোগ সহকারে খুৎবা শ্রবণ
করে ও নীরব থাকে, তার ঐ জুম‘আ থেকে (পরবর্তী) জুম‘আ
পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়’।[25]
ঘ. অনর্থক কাজ না করা
: জুম‘আর দিনে খুৎবা চলাকালে
কথা বলা, কাউকে চুপ করতে বলা বা কোন অনর্থক কাজ করা উচিত নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا
قُلْتَ
لِصَاحِبِكَ
أَنْصِتْ
يَوْمَ
الْجُمُعَةِ
وَالإِمَامُ
يَخْطُبُ
فَقَدْ
لَغَوْتَ
‘জুম‘আর
দিন ইমামের খুৎবা চলাকালে তুমি তোমার সাথীকে যদি বল, চুপ কর, তবে তুমি অনর্থক কাজ
করলে’।[26]
ঙ. ঘাড় মাড়িয়ে অতিক্রম
না করা : জুম‘আর দিনে মুছল্লীদের ঘাড়
টপকিয়ে সামনে যাওয়া ঠিক নয়। আব্দুল্লাহ বিন বুসর (রাঃ) বললেন, একদা জুম‘আর
দিন এক ব্যক্তি লোকদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। নবী করীম (ছাঃ) এ সময় খুৎবা
দিচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ
‘তুমি
বসো, তুমি লোকদের কষ্ট দিয়েছো’।[27]
১০. ছিয়াম পালন করা :
ক. ফরয ছিয়াম পালন করা
: ছিয়াম ইসলামের তৃতীয় বা চতুর্থ রুকন[28]
এবং ফরয ইবাদতের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا
الَّذِيْنَ
آمَنُوْا
كُتِبَ
عَلَيْكُمُ
الصِّيَامُ
كَمَا
كُتِبَ
عَلَى
الَّذِيْنَ
مِنْ
قَبْلِكُمْ
لَعَلَّكُمْ
تَتَّقُوْنَ-
‘হে
বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হ’ল, যেমন তা ফরয করা
হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা আল্লাহভীরু হ’তে
পার’ (বাক্বারাহ ২/১৮৩)। রাসূল (ছাঃ)
বলেন,أَتَاكُمْ
رَمَضَانُ
شَهْرٌ
مُبَارَكٌ
فَرَضَ
اللهُ
عَزَّ
وَجَلَّ
عَلَيْكُمْ
صِيَامَهُ
‘তোমাদের
নিকটে বরকতময় রামাযান মাস এসেছে। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপরে এ
মাসের ছিয়াম ফরয করেছেন’।[29]
খ. নফল ছিয়াম : নফল
ইবাদতের মধ্যে নফল ছিয়াম অতীব ফযীলতপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ
صَامَ
يَوْمًا
فِى
سَبِيلِ
اللهِ
بَعَّدَ
اللهُ
وَجْهَهُ
عَنِ
النَّارِ
سَبْعِيْنَ
خَرِيْفًا-
‘যে
ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি দিন ছিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তার চেহারাকে
জাহান্নামের আগুন হ’তে ৭০ বছরের পথ দূরে রাখবেন’।[30]
অন্য বর্ণনায় ১০০ বছরের পথ দূরে রাখবেন বলা হয়েছে।[31] বছরের বিভিন্ন সময়ে নফল
ছিয়াম রাখা যায়। বিভিন্ন সময়ের সাথে যুক্ত হওয়ায় এগুলির ফযীলতও ভিন্নতর। নিম্নে
বিভিন্ন নফল ছিয়াম উল্লেখ করা হ’ল।
মাসিক ছিয়াম :
১. শা‘বান
মাসের ছিয়াম : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রামাযানের ফরয
ছিয়ামের পর শা‘বান
মাসেই একটানা নফল ছিয়াম পালন করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন,فَمَا
رَأَيْتُ
رَسُوْلَ
اللهِ
صَلَى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِسْتَكْمَلَ
صِيَامَ
شَهْرٍ
إِلاَّ
رَمَضَانَ
وَمَا
رَأَيْتُهُ
أَكْثَرَ
صِيَامًا
مِنْهُ
فِىْ
شَعْبَانَ-
‘আমি
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রামাযান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে পুরো মাস ছিয়াম রাখতে
দেখিনি। আর শা‘বান
মাসের চেয়ে অন্য কোন মাসে এত অধিক ছিয়াম রাখতে দেখিনি’।[32]
তিনি আরো বলেন,لَمْ
يَكُنِ
النَّبِىُّ
صلى
الله
عليه
وسَلم
يَصُوْمُ
شَهْرًا
أَكْثَرَ
مِنْ
شَعْبَانَ
فَإِنَّهُ
كَانَ
يَصُوْمُ
شَعْبَانَ
كُلَّهُ-
‘রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) শা‘বান
মাসের চেয়ে অধিক ছিয়াম কোন মাসে পালন করতেন না। তিনি পুরো শা‘বান
মাসই ছিয়াম পালন করতেন’।[33]
উম্মু সালামা (রাঃ)
বলেন,مَارَأَيْتُ
النَّبِىَّ
صلى
الله
عليه
وسلم
يَصُوْمُ
شَهْرَيْنِ
مُتَتَابِعَيْنِ
إِلاَّ
شَعْبَانَ
وَرَمَضَانَ-
‘নবী
করীম (ছাঃ)-কে শা‘বান ও রামাযান ব্যতীত একাধারে দুই মাস
ছিয়াম পালন করতে দেখিনি’।[34]
অনুরূপভাবে আয়েশা (রাঃ)
বলেন,مَارَأَيْتُ
النَّبِىَّ
صلى
الله
عليه
وسلم
فِىْ
شَهْرٍ
أَكْثَرَ
صِيَامًا
مِنْهُ
فِىْ
شَعْبَانَ
كَانَ
يَصُوْمُهُ
إِلاَّ
قَلِيْلاً
بَلْ
كَانَ
يَصُوْمُهُ
كُلَّهُ-
‘শা‘বান
মাসের মত আর কোন মাসে এত অধিক নফল ছিয়াম রাখতে আমি রাসূল (ছাঃ)-কে দেখিনি। এ মাসের
কিছু ব্যতীত পুরো মাসই তিনি ছিয়াম রাখতেন’।[35]
শা‘বান
মাসের কয়েক দিন ব্যতীত ছিয়াম পালন করা রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য খাছ ছিল। উম্মতের জন্য
তিনি প্রথম অর্ধাংশ পসন্দ করেছেন। তিনি বলেন,إِذَا كَانَ
النِّصْفُ
مِنْ
شَعْبَانَ
فَلاَصَوْمَ
حَتَّى
يَجِئَ
رَمَضَانُ-
‘শা‘বান
মাসের অর্ধেক অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে রামাযান না আসা পর্যন্ত আর কোন ছিয়াম নেই’।[36]
তবে কেউ ছিয়াম রাখতে অভ্যস্ত হ’লে সে রাখতে পারে।
২. শাওয়াল মাসের ছিয়াম
: রামাযানের ছিয়াম পালনের পরে শাওয়াল মাসে
৬টি ছিয়াম রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ
صَامَ
رَمَضَانَ
ثُمَّ
أَتْبَعَهُ
سِتًّا
مِنْ
شَوَّالٍ
كَانَ
كَصِيَامِ
الدَّهْرِ-
‘যে
রামাযানের ছিয়াম রেখেছে এবং পরে শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম রেখেছে, সে যেন সারা বছর
ছিয়াম রাখল’।[37]
৩. যিলহজ্জ মাসের ছিয়াম : নফল
ছিয়ামের মধ্যে যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের ছিয়ামের মর্যাদা অত্যধিক। যিলহজ্জের
প্রথম দশকের ছিয়ামের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
مَا مِنْ
أَيَّامٍ
الْعَمَلُ
الصَّالِحُ
فِيْهَا
أَحَبُّ
إِلَى
اللهِ
مِنْ
هَذِهِ
الْأَيَّامِ
يَعْنِى
الْعَشْرَ،
قَالُوْا
يَارَسُوْلَ
اللهِ
وَلاَ
الْجِهَادُ
فِىْ
سَبِيْلِ
اللهِ
قالَ
وَلاَ
الْجِهَادُ
فِىْ
سَبِيْلِ
اللهِ
إِلاَّ
رَجُلٌ
خَرَجَ
بِنَفْسِهِ
وَمَالِهِ
فَلَمْ
يَرْجِعْ
مِنْ
ذَالِكَ
بِشَيْءٍ-
‘আল্লাহর নিকট যিলহজ্জ
মাসের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক পসন্দনীয় নেক আমল আর নেই। ছাহাবীগণ বলেন, হে
আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায়
জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি তার জান ও মাল নিয়ে বের হয়ে ফিরে আসেনি (তার শাহাদত
হওয়া এর চেয়েও অধিক মর্যাদাপূর্ণ)’।[38]
৪. প্রতি মাসে তিনদিন
ছিয়াম : প্রতি মাসে তিনদিন ছিয়াম পালন করা
রাসূল (ছাঃ)-এর নিয়মিত ও পসন্দনীয় আমল। তিনদিন ছিয়াম রাখার বিনিময়ে পুরো মাস ছিয়াম
রাখার সমান নেকী পাওয়া যায়। আবূ যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,مَنْ
صَامَ
مِنْ
كُلِّ
شَهْرٍ
ثَلاَثَةَ
أَيَّامٍ
فَذَالِكَ
صِيَامُ
الدَّهْرِ
فَأَنْزَلَ
اللهُ
عَزَّ
وَجَلَّ
تَصْدِيْقَ
ذَالِكَ
فِىْ
كِتَابِهِ:
مَنْ
جَاءَ
بِالْحَسَنَةِِ
فَلَهُ
عَشْرُ
أَمْثَالِهَا
اَلْيَوْمُ
بِعَشْرَةِ
أيَّامٍ-
‘যে
ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন ছিয়াম রাখে তা যেন সারা বছর ছিয়াম রাখার সমান। এর
সমর্থনে আল্লাহ তাঁর কিতাবে নাযিল করেন, ‘যদি কেউ একটি ভাল কাজ
করে তার প্রতিদান হ’ল এর দশগুণ’ (আন‘আম ৬/১৬০)। সুতরাং এক দিন দশদিনের সমান।[39]
চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫
তারিখে এই ছিয়াম রাখা সুন্নাত। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আবূ যার (রাঃ)-কে বলেন, হে
আবূ যার! তুমি প্রতি মাসে তিন দিন ছিয়াম রাখতে চাইলে তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে রাখ’।[40]
তবে কোন কারণে ঐ তিনদিন ছিয়াম রাখতে না পারলে অন্য দিনেও রাখা যাবে।[41]
বিশেষ দিনের ছিয়াম :
৫. আরাফার দিনের ছিয়াম
: আরাফার দিনের ছিয়াম সম্পর্কে নবী করীম
(ছাঃ) বলেন,صِيَامُ
يَوْمِ
عَرَفَةَ
إِنِّىْ
اَحْتَسِبُ
عَلَى
اللهِ
أَنْ
يُكَفِّرَ
السَّنَةَ
اللَّتِىْ
قَبْلَهُ
وَالسَّنَةَ
اللَّتِىْ
بَعْدَهُ.
‘আরাফার
দিনের ছিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক
বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন’।[42]
আরাফায় অবস্থানকারী
হাজীগণ এ দিন ছিয়াম পালন করবেন না। এছাড়া পৃথিবীর অন্যত্র অবস্থানকারী সকল মুসলমান
নফল ছিয়ামের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই ছিয়াম পালন করে অশেষ নেকী অর্জনে সচেষ্ট হবেন।
৬. আশূরার ছিয়াম
: আশূরার ছিয়াম তথা মুহাররমের ১০ তারিখের
ছিয়ামও অধিক ফযীলতপূর্ণ। ইহুদীরাও এইদিন ছিয়াম পালন করত। ফেরাঊনের কবল থেকে মূসা
(আঃ)-এর নাজাতের শুকরিয়া স্বরূপ এ ছিয়াম রাখা হয়। কারবালার প্রান্তরে হুসাইন
(রাঃ)-এর শাহাদতকে কেন্দ্র করে এ ছিয়াম পালন করলে শুধু কষ্ট করাই সার হবে। কারণ
তার অর্ধ শতাব্দী পূর্বেই ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস
(রাঃ) হ’তে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনায় এসে ইহুদীদেরকে আশূরার ছিয়াম পালন করতে দেখে এর
কারণ জানতে চাইলে তারা বলল,هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ
هَذَا
يَوْمٌ
نَجَّى
اللهُ
بَنِىْ
اِسْرَائِيْلَ
مِنْ
عَدُوِّهِمْ
فَصَامَهُ
مُوْسَى-
‘এই
দিন উত্তম দিন। এই দিনে আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের
শত্রুদের কবল থেকে মুক্তি দান করেছিলেন, ফলে মূসা (আঃ) এই দিনে ছিয়াম পালন করেছেন’।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوْسَى
مِنْكُمْ
فَصَامَهُ
وَأَمَرَ
بِصِيَامِهِ
‘আমি
তোমাদের চেয়ে মূসা (আঃ)-এর (আদর্শের) অধিক হক্বদার। অতঃপর তিনি এ দিনে ছিয়াম পালন
করেন ও ছিয়াম পালনের নির্দেশ দেন’।[43]
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,مَارَأَيْتُ
النَّبِىَّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
يَتَحَرَّى
صِيَامَ
يَوْمٍ
فَضَّلَهُ
عَلَى
غَيْرِهِ
إِلاَّ
هَذَا
الْيَوْمَ
يَوْمَ
عَاشُوْرَاءَ
وَهَذَا
الشَّهْرَ
يَعْنِىَ
شَهْرَ
رَمَضَانَ-
‘আমি
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আশূরার ছিয়ামের ন্যায় অন্য কোন ছিয়ামকে এবং এই মাস অর্থাৎ
রামাযান মাসের ন্যায় অন্য কোন মাসকে প্রাধান্য দিতে দেখিনি’।[44]
২য় হিজরীতে রামাযান
মাসের ছিয়াম ফরয হ’লে রাসূল (ছাঃ) এই নির্দেশ শিথিল করে
দেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রথমে আশূরার ছিয়াম পালনের নির্দেশ
দেন। পরে যখন রামাযান মাসের ছিয়াম ফরয করা হয় তখন আশূরার ছিয়াম ছেড়ে দেয়া হ’ল।
যার ইচ্ছা সে পালন করত, যার ইচ্ছা সে ছেড়ে দিত।[45] আশূরার ছিয়াম মুহাররমের ৯, ১০
অথবা ১০, ১১ তারিখে রাখা যায়। তবে ৯, ১০ তারিখে রাখাই সর্বোত্তম।[46]
এ ছিয়ামের ফযীলত
প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَصِيَامُ يَوْمِ
عَاشُوْرَاءَ
اَحْتَسِبُ
عَلَى
اللهِ
أَنْ
يُّكَفِّرَ
السَّنَةَ
الَّتِىْ
قَبْلََهُ-
‘আশূরার
ছিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহর নিকটে আশা রাখি যে, তা বিগত এক বছরের পাপ মোচন করে
দিবে’।[47]
৭. দাঊদ (আঃ)-এর ছিয়াম
: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দাঊদ (আঃ)-এর ছিয়ামকে
সর্বোত্তম বলেছেন। তিনি বলেন,لاَصَوْمَ فَوْقَ صَوْمِ
دَاوُدَ
عَلَيْهِ
السَّلاَمُ
شَطْرَ
الدَّهْرِ
صُمْ
يَوْمًا
وَأَفْطِرْ
يَوْمًا-
‘দাঊদ
(আঃ)-এর ছিয়ামের উপরে উত্তম ছিয়াম নেই। তা হচ্ছে অর্ধেক বছর। (সুতরাং) একদিন ছিয়াম
পালন কর ও একদিন ছেড়ে দাও’।[48]
সাপ্তাহিক ছিয়াম : সপ্তাহের
সোমবার ও বৃহস্পতিবারের ছিয়ামের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সোমবার ও বৃহস্পতিবার ছিয়াম রাখতেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হ’ল,
হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার ছিয়াম রাখেন। তিনি বলেন,تُعْرَضُ
الْأَعْمَالُ
يَوْمَ
الْإِثْنَيْنِ
وَالْخَمِيْسِ
فأُحِبُّ
أَنْ
يُعْرَضَ
عَمَلِىْ
وَأَنَا
صَائِمٌ-
‘প্রতি
সোম ও বৃহস্পতিবার আমলনামা সমূহ আল্লাহর নিকটে পেশ করা হয়। আমি পসন্দ করি যে,
ছিয়াম অবস্থায় আমার আমলনামা আল্লাহর নিকটে পেশ করা হোক’।[49]
১১. আল্লাহর যিকর
করা :
যিকর এক গুরুত্বপূর্ণ
ইবাদত, যার মাধ্যমে মুমিন হৃদয়ে প্রশান্তি অর্জিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন,الَّذِيْنَ
آمَنُوْا
وَتَطْمَئِنُّ
قُلُوْبُهُمْ
بِذِكْرِ
اللهِ
أَلاَ
بِذِكْرِ
اللهِ
تَطْمَئِنُّ
الْقُلُوْبُ-
‘যারা
আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহকে স্মরণ করলে যাদের অন্তরে প্রশান্তি
আসে। মনে রেখ, আল্লাহর স্মরণেই কেবল হৃদয় প্রশান্ত হয়’ (রা‘দ ১৩/২৮)। সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করা মুমিনের জন্য
করণীয়। আল্লাহ বলেন, وَلَذِكْرُ اللهِ أَكْبَرُ
وَاللهُ
يَعْلَمُ
مَا
تَصْنَعُوْنَ-
‘আর
(সর্বাবস্থায়) আল্লাহর স্মরণই সবচেয়ে বড় বস্ত্ত। আল্লাহ জানেন যা কিছু তোমরা করে
থাক’ (আনকাবূত ২৯/৪৫)।
আর মুমিনের বৈশিষ্ট্য হ’ল
কোন কিছু তাকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল রাখতে পারে না। আল্লাহ বলেন,رِجَالٌ
لاَ
تُلْهِيْهِمْ
تِجَارَةٌ
وَلاَ
بَيْعٌ
عَنْ
ذِكْرِ
اللهِ
وَإِقَامِ
الصَّلاَةِ
وَإِيتَاءِ
الزَّكَاةِ
يَخَافُوْنَ
يَوْمًا
تَتَقَلَّبُ
فِيْهِ
الْقُلُوْبُ
وَالْأَبْصَارُ-
‘ঐ
লোকগুলি হ’ল
তারাই, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য বা ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং ছালাত কায়েম
ও যাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন তাদের হৃদয় ও
চক্ষু বিপর্যস্ত হবে’ (নূর ২৪/৩৭)। সুতরাং বেশী বেশী করে আল্লাহর যিকর করতে
হবে। আল্লাহ বলেন, وَاذْكُرُوْا اللهَ كَثِيْرًا
لَعَلَّكُمْ
تُفْلِحُوْنَ
‘এবং
আল্লাহকে অধিকহারে স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (আনফাল ৮/৪৫)।
যিকরের ফযীলত সম্পর্কে
রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার এক দল ভ্রাম্যমান বর্ধিত ফেরেশতা
রয়েছে। তারা যিকরের বৈঠকসমূহ সন্ধান করে বেড়ান। তারা যখন কোন যিকরের বৈঠক পান তখন
সেখানে তাদের (যিকরকারীদের) সাথে বসে যান। আর পরস্পর একে অপরকে বাহু দ্বারা ঘিরে
ফেলেন। এমনকি তারা তাদের মাঝে ও নিকটতম আকাশের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে ফেলেন।
আল্লাহর যিকরকারীগণ যখন পৃথক হয়ে যায় তখন তারা আকাশমন্ডলীতে আরোহণ করে। তিনি বলেন,
তখন আল্লাহ তা‘আলা
তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কোত্থেকে আসছ? অথচ তিনি তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক
অবহিত। তখন তারা বলতে থাকেন, আমরা ভূমন্ডলে অবস্থানকারী আপনার বান্দাদের কাছ হ’তে
আসছি, যারা আপনার তাসবীহ পড়ে, তাকবীর পড়ে, তাহলীল বলে (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ-এর)
যিকর করে, আপনার প্রশংসা করে এবং আপনার নিকট তাদের প্রত্যাশিত বিষয় প্রার্থনা করে।
তখন আল্লাহ বলেন, আমার
বান্দারা আমার নিকট কি প্রার্থনা করে? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট আপনার জান্নাত
প্রত্যাশা করে। তিনি বলেন, তারা কি আমার জান্নাত প্রত্যক্ষ করেছে? তারা বলেন, না;
হে আমাদের প্রভু! তিনি বলেন, তারা যদি আমার জান্নাত প্রত্যক্ষ করত তাহ’লে
তারা কী করত? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট আশ্রয় চায়। তিনি বলেন, কি বিষয় হ’তে
তারা আমার নিকট আশ্রয় চায়? তারা বলেন, হে আমাদের প্রভু! আপনার জাহান্নাম হ’তে
(মুক্তির জন্য)। তিনি বলেন, তারা কি আমার জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করেছে? তারা বলেন,
না; তারা প্রত্যক্ষ করেনি। তিনি বলেন, তারা যদি আমার জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করত তাহ’লে
কী করত? তারা বলেন, তারা আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহ
বলবেন, আমি তাদের মার্জনা করে দিলাম এবং তারা যা প্রার্থনা করছিল আমি তা তাদের
প্রদান করলাম। আর তারা যা হ’তে আশ্রয় চেয়েছিল আমি তা থেকে তাদের মুক্তি
দিলাম। অতঃপর তারা বলবে, হে আমাদের রব! তাদের মাঝে তো অমুক পাপী বান্দা ছিল, যে
তাদের সাথে বৈঠকের নিকট দিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে বসেছিল। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ বলবেন, আমি তাকেও মাফ করে দিলাম। তারা তো এমন একটি কওম যাদের সঙ্গীরা
দুর্ভাগা হয় না’।[50]
নবী করীম (ছাঃ) আরো
বলেন,أَلاَ
أُنَبِّئُكُمْ
بِخَيْرِ
أَعْمَالِكُمْ
وَأَرْضَاهَا
عِنْدَ
مَلِيْكِكُمْ
وَأَرْفَعِهَا
فِىْ
دَرَجَاتِكُمْ
وَخَيْرٍ
لَكُمْ
مِنْ
إِعْطَاءِ
الذَّهَبِ
وَالْوَرِقِ
وَمِنْ
أَنْ
تَلْقَوْا
عَدُوَّكُمْ
فَتَضْرِبُوْا
أَعْنَاقَهُمْ
وَيَضْرِبُوْا
أَعْنَاقَكُمْ.
قَالُوْا
وَمَا
ذَاكَ
يَا
رَسُوْلَ
اللهِ
قَالَ
ذِكْرُ
اللهِ-
‘আমি
কি তোমাদের আমলসমূহের সর্বোত্তমটি সম্পর্কে তোমাদেরকে অবহিত করবো না, যা তোমাদের
প্রভুর নিকট সর্বাধিক প্রিয়, তোমাদের মর্যাদাকে অধিক উন্নীতকারী, তোমাদের
সোনা-রূপা দান করার চেয়ে এবং যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে তোমাদের শক্রুদের হত্যা করা এবং
তোমাদের নিহত হওয়ার চেয়ে উত্তম? ছাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেটি কী? তিনি
বলেন, আল্লাহর যিকির’।[51]
হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ
বলেন,أَنَا
عِنْدَ
ظَنِّ
عَبْدِىْ
بِىْ،
وَأَنَا
مَعَهُ
إِذَا
ذَكَرَنِىْ،
فَإِنْ
ذَكَرَنِىْ
فِىْ
نَفْسِهِ
ذَكَرْتُهُ
فِىْ
نَفْسِىْ،
وَإِنْ
ذَكَرَنِىْ
فِىْ
مَلأٍ
ذَكَرْتُهُ
فِىْ
مَلأٍ
خَيْرٍ
مِنْهُمْ،
وَإِنْ
تَقَرَّبَ
إِلَىَّ
بِشِبْرٍ
تَقَرَّبْتُ
إِلَيْهِ
ذِرَاعًا،
وَإِنْ
تَقَرَّبَ
إِلَىَّ
ذِرَاعًا
تَقَرَّبْتُ
إِلَيْهِ
بَاعًا،
وَإِنْ
أَتَانِىْ
يَمْشِىْ
أَتَيْتُهُ
هَرْوَلَةً-
‘আমি
সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে
আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও স্বয়ং তাকে স্মরণ করি। আর
যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ
করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি
সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু’হাত এগিয়ে যাই। আর সে
যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই’।[52]
এরপর রাসূল (ছাঃ)
যিকরকারী ও যে যিকর করে না তার উদাহরণ দিয়ে বলেন,مَثَلُ الَّذِىْ
يَذْكُرُ
رَبَّهُ
وَالَّذِىْ
لاَ
يَذْكُرُ
مَثَلُ
الْحَىِّ
وَالْمَيِّتِ-
‘যে
তার প্রতিপালকের যিকর করে, আর যে যিকর করে না, তাদের উপমা হ’ল
জীবিত ও মৃত ব্যক্তির ন্যায়’।[53] অন্যত্র তিনি বলেন,مَثَلُ
الْبَيْتِ
الَّذِىْ
يُذْكَرُ
اللهُ
فِيْهِ
وَالْبَيْتِ
الَّذِىْ
لاَ
يُذْكَرُ
اللهُ
فِيْهِ
مَثَلُ
الْحَىِّ
وَالْمَيِّتِ-
‘যে
ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় এবং যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় না এরূপ দু’টি
ঘরের তুলনা করা যায় জীবিত ও মৃতের সঙ্গে’।[54]
মানুষকে সর্বাবস্থায়
আল্লাহর যিকর করতে হবে। এমনকি ভুলে যাওয়ার সময়ও আল্লাহকে স্মরণ করার নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে। তিনি বলেন,وَاذْكُرْ رَبَّكَ إِذَا
نَسِيتَ
وَقُلْ
عَسَى
أَنْ
يَهْدِيَنِ
رَبِّي
لِأَقْرَبَ
مِنْ
هَذَا
رَشَدًا-
‘আর
তুমি তোমার পালনকর্তাকে স্মরণ কর যখন তুমি ভুলে যাও এবং বল নিশ্চয়ই আমার প্রভু
আমাকে এর চাইতে নিকটতম সত্যের দিকে পথপ্রদর্শন করবেন’ (কাহফ ১৮/২৪)। আর আল্লাহর স্মরণ
থেকে বিস্মৃত হ’লে
মানুষ ক্ষতির মধ্যে পতিত হয়। আল্লাহ বলেন,يَا أَيُّهَا
الَّذِيْنَ
آمَنُوْا
لاَ
تُلْهِكُمْ
أَمْوَالُكُمْ
وَلاَ
أَوْلَادُكُمْ
عَنْ
ذِكْرِ
اللهِ
وَمَنْ
يَفْعَلْ
ذَلِكَ
فَأُولَئِكَ
هُمُ
الْخَاسِرُوْنَ-
‘হে
মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে
উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ করে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত’ (মুনাফিকূন ৬৩/৯)।
ক. সকাল-সন্ধ্যায় যিকর
করা : সকাল-সন্ধ্যা সর্বদা আল্লাহর যিকর করা
মুমিনের জন্য কর্তব্য। আল্লাহ বলেন,فَسُبْحَانَ اللهِ
حِيْنَ
تُمْسُوْنَ
وَحِيْنَ
تُصْبِحُوْنَ-
‘অতএব
তোমরা আল্লাহর তাসবীহ বর্ণনা কর যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে এবং সকালে উঠবে’ (রূম ৩০/১৭)। তিনি আরো বলেন,وَاذْكُرْ
رَبَّكَ
كَثِيْرًا
وَسَبِّحْ
بِالْعَشِيِّ
وَالْإِبْكَارِ-
‘আর
তোমার প্রভুকে বেশী বেশী স্মরণ কর এবং সন্ধ্যায় ও সকালে তাঁর মহিমা বর্ণনা কর’ (আলে ইমরান ৩/৪১)। অন্যত্র তিনি
বলেন,وَسَبِّحْ
بِحَمْدِ
رَبِّكَ
بِالْعَشِيِّ
وَالْإِبْكَارِ-
‘আর
সন্ধ্যায় ও সকালে তোমার রবের প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা কর’ (মুমিন ৪০/৫৫)।
সকাল-সন্ধ্যায়
নিম্নোক্ত যিকর ও তাসবীহ সমূহ পাঠ করা যায়। ১. আয়াতুল কুরসী তেলাওয়াত করা।[55] ২.
সূরা ইখলাছ, ফালাক্ব ও নাস তিনবার করে পাঠ করা।[56] ৩. এই দো‘আ
পাঠ করা,
أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى
الْمُلْكُ
لِلَّهِ
وَالْحَمْدُ
لِلَّهِ
لاَ
إِلَهَ
إِلاَّ
اللهُ
وَحْدَهُ
لاَ
شَرِيكَ
لَهُ
لَهُ
الْمُلْكُ
وَلَهُ
الْحَمْدُ
وَهُوَ
عَلَى
كُلِّ
شَىْءٍ
قَدِيْرٌ
اللَّهُمَّ
إِنِّىْ
أَسْأَلُكَ
مِنْ
خَيْرِ
هَذِهِ
اللَّيْلَةِ
وَخَيْرِ
مَا
فِيهَا
وَأَعُوْذُ
بِكَ
مِنْ
شَرِّهَا
وَشَرِّ
مَا
فِيْهَا
اللَّهُمَّ
إِنِّىْ
أَعُوْذُ
بِكَ
مِنَ
الْكَسَلِ
وَالْهَرَمِ
وَسُوْءِ
الْكِبَرِ
وَفِتْنَةِ
الدُّنْيَا
وَعَذَابِ
الْقَبْرِ
‘আমরা এবং সমগ্র জগৎ
আল্লাহর উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি
ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই।
রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি
তোমার নিকট এ রাতের মঙ্গল চাই এবং এ রাতে যা আছে, তার মঙ্গল কামনা করি। আমি আশ্রয়
চাই এ রাতের অমঙ্গল হ’তে এবং এ রাতে যে অমঙ্গল রয়েছে তা হ’তে।
হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা,
দুনিয়ার ফিৎনা ও কবরের শাস্তি হ’তে’।[57]
৪. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
সকালে বলতেন,اللَّهُمَّ
بِكَ
أَصْبَحْنَا
وَبِكَ
أَمْسَيْنَا
وَبِكَ
نَحْيَا
وَبِكَ
نَمُوْتُ
وَإِلَيْكَ
النُّشُوْرُ.
‘হে
আল্লাহ! তোমার সাহায্যে আমরা সকালে উঠি আবার তোমার সাহায্যেই সন্ধ্যায় উপনীত হই।
তোমার নামে আমরা বেঁচে থাকি এবং তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করি। তোমারই নিকট আমাদের
প্রত্যাবর্তন’।
সন্ধ্যায় বলতেন,اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا
وَبِكَ
نَحْيَا
وَبِكَ
نَمُوْتُ
وَإِلَيْكَ
النُّشُوْرُ
‘হে
আল্লাহ! তোমার সাহায্যে আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হই আবার তোমার সাহায্যে সকালে উঠি।
তোমার নামে আমরা বেঁচে থাকি, তোমার নামে মৃত্যুবরণ করি এবং তোমার নিকট রয়েছে
আমাদের পুনরুত্থান’।[58]
৫. সাইয়েদুল ইস্তেগফার
পাঠ করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিবিষ্ট মনে
উক্ত দো‘আ
দিবসে পাঠ করবে এবং সন্ধ্যার পূর্বে মারা যাবে সে ব্যক্তি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত
হবে। আর যে ব্যক্তি ইয়াক্বীনের সাথে উক্ত দো‘আ রাতে পাঠ করবে এবং
সকাল হওয়ার আগে মারা যাবে, সেও জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবে’।[59]
اللَّهُمَّ أَنْتَ
رَبِّى،
لاَ
إِلَهَ
إِلاَّ
أَنْتَ،
خَلَقْتَنِى
وَأَنَا
عَبْدُكَ،
وَأَنَا
عَلَى
عَهْدِكَ
وَوَعْدِكَ
مَا
اسْتَطَعْتُ،
أَعُوذُ
بِكَ
مِنْ
شَرِّ
مَا
صَنَعْتُ،
أَبُوءُ
لَكَ
بِنِعْمَتِكَ
عَلَىَّ
وَأَبُوءُ
بِذَنْبِى،
اغْفِرْ
لِى،
فَإِنَّهُ
لاَ
يَغْفِرُ
الذُّنُوبَ
إِلاَّ
أَنْتَ-
‘হে আল্লাহ! তুমি আমার
পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস।
আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার
কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি
দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’।
سُبْحَانَ اللهِ
وَبِحَمْدِهِ،
سُبْحَانَ
اللهِ
الْعَظِيْمِ-
৬. সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী,
সুব্হা-নাল্লা-হিল ‘আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০
বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী’ পড়বে।
‘মহাপবিত্র
আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান’।
এই দো‘আ
পাঠের ফলে তার সকল গোনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দো‘আ সম্পর্কে বলেন যে, দু’টি
কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকটে খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের
পাল্লায় খুবই ভারী। তাহ’ল সুব্হা-নাল্লা-হি….।[60]
সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করার
আরো অনেক দো‘আ,
যিকর ও তাসবীহ-তাহলীল রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ এখানে কয়েকটি উল্লেখ করা হ’ল।
খ. সর্বাবস্থায় যিকর
করা : সর্বদা সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করা
মুমিনের জন্য অবশ্য করণীয়। আল্লাহ বলেন,الَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ
اللهَ
قِيَامًا
وَقُعُوْدًا
وَعَلَى
جُنُوْبِهِمْ-
‘যারা
দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে’ (আলে ইমরান ৩/১৯১)। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) সর্বদা আল্লাহর যিকর করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন,كَانَ
النَّبِىُّ
صلى
الله
عليه
وسلم
يَذْكُرُ
اللهَ
عَلَى
كُلِّ
أَحْيَانِهِ.
‘নবী
করীম (ছাঃ) সর্বক্ষণ (সর্বাবস্থায়) আল্লাহর যিকির করতেন’।[61]
যিকর কিভাবে করবে
: ‘যিকর’ হ’ল
ইবাদত, যা অবশ্যই সুন্নাতী তরীকায় করতে হবে। এটা নীরবে চুপে চুপে করতে হবে। মহান
আল্লাহ বলেন, ادْعُوْا
رَبَّكُمْ
تَضَرُّعًا
وَخُفْيَةً
‘তোমরা
তোমাদের প্রতিপালককে ডাকো বিনীতভাবে ও চুপে চুপে’ (আ‘রাফ ৭/৫৫)। তিনি আরো বলেন,وَاذْكُرْ
رَبَّكَ
فِيْ
نَفْسِكَ
تَضَرُّعًا
وَخِيْفَةً
وَدُوْنَ
الْجَهْرِ
مِنَ
الْقَوْلِ
بِالْغُدُوِّ
وَالْآصَالِ
وَلَا
تَكُنْ
مِنَ
الْغَافِلِيْنَ-
‘তোমার
প্রতিপালককে স্মরণ কর মনে মনে কাকুতি-মিনতি ও ভীতি সহকারে অনুচ্চস্বরে সকালে ও
সন্ধ্যায়। আর তুমি উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (আ‘রাফ ৭/২০৫)।
কুরআন ও হাদীছে
উল্লিখিত বাক্য দ্বারা যিকর করতে হবে। শুধু ‘আল্লাহ’
‘আল্লাহ’
যিক্র করা বিদ‘আত
ও শরী‘আত
বিরোধী কাজ। আর সর্বোত্তম যিক্র হচ্ছে, لاَ إِلَهَ
إِلاَّ
اللهُ
‘লা
ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ বলা।[62]
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে
আমাদের দেশে প্রচলিত অধিকাংশ যিকরই নিজেদের রচিত। কুরআন হাদীছে যার কোন ভিত্তি
নেই। অথচ এগুলির মাধ্যমেই মজলিসকে সরগরম রাখা হচ্ছে। ভক্তরা আবেগতাড়িত হয়ে এ সমস্ত
যিকিরে বেশামাল হয়ে পড়ে। এসবই বিদ‘আত। এগুলি পরিহার করা
যরূরী। তাছাড়া উচ্চৈঃস্বরে সম্মিলিত যিকির জঘন্য বিদ‘আত।
আল্লাহ তা‘আলা
এ ধরনের যিকির থেকে নিষেধ করেছেন’ (আ‘রাফ
৭/২০৫)।
গ. দরূদ পাঠ করা
: রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে দরূদ পাঠ করা দো‘আ
কবুল হওয়া ও আল্লাহর রহমত লাভের মাধ্যম। নবীর উপরে দরূদ পাঠের জন্য স্বয়ং আল্লাহ
নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,إِنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتَهُ
يُصَلُّوْنَ
عَلَى
النَّبِيِّ
يَاأَيُّهَا
الَّذِيْنَ
آمَنُوْا
صَلُّوْا
عَلَيْهِ
وَسَلِّمُوْا
تَسْلِيْمًا-
‘নিশ্চয়ই
আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ প্রেরণ করেন। (অতএব) হে মুমিনগণ! তোমরা
তার প্রতি দরূদ ও সালাম প্রেরণ কর’ (আহযাব ৩৩/৫৬)। ইমাম তিরমিযী (রহঃ)
বলেন, এখানে আল্লাহর দরূদ অর্থ রহমত বর্ষণ করা এবং ফেরেশতাদের দরূদ অর্থ মাগফিরাত
কামনা করা।[63] ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর দরূদ অর্থ ফেরেশতাগণের নিকটে তার
প্রশংসা করা এবং ফেরেশতাদের দরূদ অর্থ তার জন্য দো‘আ করা।[64]
দরূদ পাঠের ফযীলত
সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ صَلَّى عَلَىَّ
صَلاَةً
وَاحِدَةً
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
عَشْرَ
صَلَوَاتٍ
وَحُطَّتْ
عَنْهُ
عَشْرُ
خَطِيئَاتٍ
وَرُفِعَتْ
لَهُ
عَشْرُ
دَرَجَاتٍ-
‘যে
ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার রহমত
নাযিল করবেন, তার দশটি শুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত
করা হবে’।[65]
উল্লেখ্য, দরূদ বলতে ‘দরূদে
ইবরাহীম’
উদ্দেশ্য, যা ছালাতের শেষ বৈঠকে পড়া হয়। বর্তমানে দরূদের নামে নিজেদের বানানো দরূদ
যেমন ‘ইয়া
নবী সালা-মু আলাইকা’… ইত্যাদি পাঠ করা হয়, যা বিদ‘আত
ও শরী‘আত
বিরোধী কাজ। এগুলি সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য।
ঘ. ছালাত পরবর্তী দো‘আ
ও যিকর সমূহ : ছালাতের সালাম ফিরানোর পরে
তাসবীহ-তাহলীল ও দো‘আ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। নিম্নে কিছু
দো‘আ
ও যিকর উল্লেখ করা হ’ল।-
1. اَللهُ أَكْبَرُ،
أَسْتَغْفِرُ اللهَ،
اَسْتَغْفِرُ اللهَ،
اَسْتَغْفِرُ اللهَ-
‘আল্লাহ সবার চেয়ে বড়।
আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।[66]
2. اَللَّهُمَّ أَنْتَ
السَّلاَمُ وَمِنْكَ
السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ
يَا ذَا
الْجَلاَلِ وَ
الْإِكْرَامِ.
‘হে আল্লাহ! আপনিই
শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময় আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিক’।[67]
3. لآ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ
وَحْدَهُ لاَ
شَرِيْكَ لَهُ،
لَهُ الْمُلْكُ
وَ لَهُ
الْحَمْدُ وَهُوَ
عَلَى كُلِّ
شَيْءٍ قَدِيْرٌ،
لاَحَوْلَ وَلاَ
قُوَّةَ إلاَّ
بِاللهِ- اَللَّهُمَّ
أَعِنِّيْ عَلَى
ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ
وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ،
اَللَّهُمَّ لاَ
مَانِعَ لِمَا
أَعْطَيْتَ وَلاَ
مُعْطِيَ لِمَا
مَنَعْتَ وَلاَ
يَنْفَعُ ذَا
الْجَدِّ مِنْكَ
الْجَدُّ-
‘নেই কোন উপাস্য আল্লাহ
ব্যতীত, যিনি একক ও শরীকবিহীন। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয়
প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ
ব্যতীত’।[68]
‘হে
আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর
ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন’।[69] ‘হে
আল্লাহ! আপনি যা দিতে চান, তা রোধ করার কেউ নেই এবং আপনি যা রোধ করেন, তা দেওয়ার
কেউ নেই। কোন সম্পদশালী ব্যক্তির সম্পদ কোন উপকার করতে পারে না আপনার রহমত ব্যতীত’।[70]
৪. সুবহা-নাল্লা-হ ‘পবিত্রতাময়
আল্লাহ’
(৩৩ বার)। আলহাম্দুলিল্লা-হ ‘যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য’
(৩৩ বার)। আল্লাহু আকবার ‘আল্লাহ সবার চেয়ে বড়’
(৩৩ বার) এবং একবার-لاَ إِلَهَ إِلاَّ
اللهُ
وَحْدَهُ
لاَ
شَرِيْكَ
لَهُ،
لَهُ
الْمُلْكُ
وَلَهُ
الْحَمْدُ
وَهُوَ
عَلَى
كُلِّ
شَيْئٍ
قَدِيْرٌ-
‘নেই
কোন উপাস্য একক আল্লাহ ব্যতীত; তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও
তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। অথবা আল্লা-হু আকবার
(৩৪ বার)।[71]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন, ‘যে
ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর উক্ত দো‘আ পাঠ করবে, তার সকল
গোনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়’।[72]
৫. আয়াতুল কুরসী পাঠ
করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর
জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত’।[73]
শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযু্ক্ত
থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হ’তে না পারে’।[74]
6. سُبْحَانَ اللهِ
وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ
خَلْقِهِ وَرِضَا
نَفْسِهِ وَزِنَةَ
عَرْشِهِ وَمِدَادَ
كَلِمَاتِهِ-
‘মহাপবিত্র আল্লাহ এবং
সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার
সন্তুষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওযন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ’।[75]
7. اَللَّهُمَّ أَدْخِلْنِىْ
الْجَنَّةَ وَأَجِرْنِىْ
مِنَ النَّارِ-
‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে
জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও’! [76]
8. اَللَّهُمَّ إِنِّي
أَسْأَلُكَ الْهُدَى
وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ
وَالْغِنَى-
হে আল্লাহ! আমি তোমার
নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি’।[77]
9. اَللَّهُمَّ اكْفِنِيْ
بِحَلاَلِكَ عَنْ
حَرَامِكَ وَأَغْنِنِىْ
بِفَضْلِكَ عَمَّنْ
سِوَاكَ-
‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে
হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে
মুখাপেক্ষীহীন করুন! রাসূল (ছাঃ) বলেন, এই দো‘আর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ
থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন’।[78]
10.
أَسْتَغْفِرُ
اللهَ الَّذِىْ
لآ إِلَهَ
إِلاَّ هُوَ
الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ
وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ-
‘আমি আল্লাহর নিকটে
ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও
বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি’।
এই দো‘আ
পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক হয়’।[79]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দৈনিক ১০০ করে বার তওবা করতেন’।[80]
১১. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
প্রত্যেক ছালাতের শেষে সূরা ‘ফালাক্ব’ ও ‘নাস’
পড়ার নির্দেশ দিতেন।[81] তিনি প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় সূরা ইখলাছ, ফালাক্ব ও
নাস পড়ে দু’হাতে
ফুঁক দিয়ে মাথা ও চেহারাসহ সাধ্যপক্ষে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। তিনি এটি তিনবার
করতেন।[82]
১২. তওবা ও ইস্তেগফার
করা :
মানুষ জেনে, না জেনে,
বুঝে না বুঝে অনেক সময় পাপ কাজ করে ফেলে। তাই এই পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভের উপায়
হচ্ছে তওবা করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহ বলেন, وَاسْتَغْفِرُوا
اللهَ
إِنَّ
اللهَ
غَفُوْرٌ
رَحِيْمٌ-
‘এবং
আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বক্বারাহ ২/১৯৯; মুয্যাম্মেল ৭৩/২০)।
তিনি আরো বলেন, وَأَنِ اسْتَغْفِرُوْا رَبَّكُمْ
ثُمَّ
تُوْبُوْا
إِلَيْهِ-
‘এবং
এ মর্মে যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁর দিকে ফিরে
যাও’ (হূদ ১১/২)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন, وَاللهِ
إِنِّىْ
لَاَسْتَغْفِرُ
اللهَ
وَأَتُوْبُ
إِلَيْهِ
فِى
الْيَوْمِ
أَكْثَرَ
مِنْ
سَبْعِيْنَ
مَرَّةً-
‘আল্লাহর
কসম! আমি প্রতিদিন ৭০ বারেরও অধিক তওবা করি এবং আল্লাহর নিকট গুনাহের জন্য ক্ষমা
চাই’।[83]
অন্য হাদীছে ১০০ বারের কথা এসেছে।[84] এখানে ৭০ বা ১০০ বার দ্বারা সংখ্যা উদ্দেশ্য
নয়; বরং উদ্দেশ্য হল বেশী বেশী তওবা করা।
পাপ করার পর আল্লাহর
কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,أَلَمْ
يَعْلَمُواْ
أَنَّ
اللهَ
هُوَ
يَقْبَلُ
التَّوْبَةَ
عَنْ
عِبَادِهِ
وَيَأْخُذُ
الصَّدَقَاتِ
وَأَنَّ
اللهَ
هُوَ
التَّوَّابُ
الرَّحِيْمُ-
‘এরা
কি জানে না যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং ছাদাক্বা গ্রহণ করে
থাকেন। আর আল্লাহই একমাত্র সেই মহান সত্তা যিনি তওবা কবুলকারী, পরম দয়াবান’
(তওবা ৯/১০৪)। অন্যত্র তিনি বলেন,وَهُوَ الَّذِيْ
يَقْبَلُ
التَّوْبَةَ
عَنْ
عِبَادِهِ
وَيَعْفُوْ
عَنِ
السَّيِّئَاتِ
وَيَعْلَمُ
مَا
تَفْعَلُوْنَ-
‘তিনিই
সেই মহান সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং অপরাধ ক্ষমা করে দেন।
তোমরা যা কিছুই করো সবই তিনি অবহিত’ (শূরা ৪২/২৫)।
পাপ করার পর তওবা না
করলে তাকে যালেম বলে আল্লাহ অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন,وَمَنْ
لَّمْ
يَتُبْ
فَأُوْلَئِكَ
هُمُ
الظَّالِمُوْنَ
‘যারা
তওবা করবে না তারা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত’ (হুজুরাত ৪৯/১১)। পক্ষান্তরে
আল্লাহ বান্দার তওবায় অত্যন্ত খুশী হন। রাসূল (ছাঃ) বলেন,
لَلَّهُ أَشَدُّ
فَرَحًا
بِتَوْبَةِ
عَبْدِهِ
الْمُؤْمِنِ
مِنْ
رَجُلٍ
فِى
أَرْضٍ
دَوِيَّةٍ
مَهْلَكَةٍ
مَعَهُ
رَاحِلَتُهُ
عَلَيْهَا
طَعَامُهُ
وَشَرَابُهُ
فَنَامَ
فَاسْتَيْقَظَ
وَقَدْ
ذَهَبَتْ
فَطَلَبَهَا
حَتَّى
أَدْرَكَهُ
الْعَطَشُ
ثُمَّ
قَالَ
أَرْجِعُ
إِلَى
مَكَانِى
الَّذِى
كُنْتُ
فِيْهِ
فَأَنَامُ
حَتَّى
أَمُوْتَ.
فَوَضَعَ
رَأْسَهُ
عَلَى
سَاعِدِهِ
لِيَمُوْتَ
فَاسْتَيْقَظَ
وَعِنْدَهُ
رَاحِلَتُهُ
وَعَلَيْهَا
زَادُهُ
وَطَعَامُهُ
وَشَرَابُهُ
فَاللهُ
أَشَدُّ
فَرَحًا
بِتَوْبَةِ
الْعَبْدِ
الْمُؤْمِنِ
مِنْ
هَذَا
بِرَاحِلَتِهِ
وَزَادِهِ-
‘আল্লাহ তা‘আলা
তাঁর মুমিন বান্দার তওবার কারণে ঐ ব্যক্তির চেয়েও অধিক আনন্দিত হন, যে লোক
ছায়া-পানিহীন আশঙ্কাপূর্ণ বিজন মাঠে ঘুমিয়ে পড়ে এবং তার সাথে থাকে খাদ্য পানীয় সহ
একটি সওয়ারী। এরপর ঘুম হ’তে জেগে দেখে যে, সওয়ার কোথায় অদৃশ্য হয়ে
গেছে। তারপর সে সেটি খুঁজতে খুঁজতে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে এবং বলে, আমি আমার পূর্বের
জায়গায় গিয়ে চিরনিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে মারা যাব। (এ কথা বলে) সে মৃত্যুর জন্য বাহুতে
মাথা রাখল। কিছুক্ষণ পর জাগ্রত হয়ে সে দেখল, পানাহার সামগ্রী বহনকারী সওয়ারীটি তার
কাছে। (সওয়ারী এবং পানাহার সামগ্রী পেয়ে) লোকটি যে পরিমাণ আনন্দিত হয়, মুমিন
বান্দার তওবার কারণে আল্লাহ তার চেয়েও বেশী আনন্দিত হন’।[85]
সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের উচিত প্রতি দিন বেশী বেশী তওবা ও ইস্তেগফার করা, যাতে আল্লাহ
খুশী হয়ে তাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেন।
পরবর্তী অংশ: মুমিন কিভাবে
দিন অতিবাহিত করবে (৩)
– ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল
ইসলাম
[1].
আবুদাঊদ হা/৩৯৩; তিরমিযী হা/১৪৯; মিশকাত হা/৫৮৩; ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৩২৫ ‘পাঁচ
ওয়াক্ত ছালাতের সময়’ অনুচ্ছেদ; ছহীহুল জামে‘
হা/১৪০২।
[2].
তিরমিযী হা/৪২৯, ১১৬১; মিশকাত হা/১১৭১-৭২, সনদ হাসান।
[3].
আবু দাঊদ হা/১২৭২; মিশকাত হা/১১৭২, সনদ হাসান।
[4]. নাসাঈ হা/৪৭৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/৪৮১।
[5].
বুখারী হা/২৯৩১, ৪৫৩৩; মুসলিম হা/৬২৯; আবুদাউদ হা/৪১০-১১; তিরমিযী হা/২৯৮২।
[6].
বুখারী হা/৫৫৩, ৫৯৪; নাসাঈ হা/৪৭৪; মিশকাত হা/৫৯৫।
[7].
ছহীহ আত-তারগীব হা/৪৭৯।
[8].
বুখারী হা/৬৫৭; মুসলিম হা/৬৫১-৫২; মিশকাত হা/১৩৭৮ ‘জুম‘আ
ওয়াজিব হওয়া’ অনুচ্ছেদ।
[9].
মুসলিম হা/৮৬৫; ইবনু মাজাহ হা/৭৯৪; নাসাঈ হা/১৩৭০; মিশকাত হা/১৩৭০।
[10].
আবু ইয়া‘লা, ছহীহ আত-তারগীব হা/৭৩৩; ছহীহাহ
হা/৩২০১।
[11].
আবু দাউদ হা/১০৫২; নাসাঈ হা/১৩৮৯; ছহীহুল জামে‘
হা/৬১৪৩; মিশকাত হা/১৩৭১।
[12].
ছহীহ আত-তারগীব হা/৭২৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৬১৪৪।
[13].
ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/১৮৫৭, সনদ হাসান ছহীহ।
[14].
ইবনু মাজাহ হা/১০৮৪; মিশকাত হা/১৩৬৩ ‘জুম‘আ’
অনুচ্ছেদ, সনদ হাসান।
[15].
আহমাদ হা/৬৫৮২; তিরমিযী হা/১০৭৪; মিশকাত হা/১৩৬৭ ‘জুম‘আ’
অনুচ্ছেদ।
[16].
আবুদাঊদ হা/১০৪৭; নাসাঈ হা/১৩৭৪; ইবনু মাজাহ হা/১০৮৫; মিশকাত হা/১৩৬১, ১৩৬৩;
ছহীহুল জামে‘ হা/২২১২।
[17].
মুসলিম হা/৮৫২; মিশকাত হা/১৩৫৭, ‘জুম‘আ’
অনুচ্ছেদ।
[18].
তিরমিযী হা/৪৮৯; মিশকাত হা/১৩৬০, ‘জুম‘আ’
অনুচ্ছেদ।
[19].
ইবনুল ক্বাইয়িম, যা-দুল মা‘আদ ১/৩৮৬।
[20].
মুসলিম হা/৪৮২; মিশকাত হা/৮৯৪ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’
অনুচ্ছেদ।
[21].
বুখারী হা/৮৮১-৮৩, ৯১০; মুসলিম হা/৮৫০; মিশকাত হা/১৩৮১-৮২, ‘পরিচ্ছন্নতা
অর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া’ অনুচ্ছেদ।
[22].
আবুদাঊদ হা/৩৪৫; নাসাঈ হা/১৩৮৪; ইবনু মাজাহ হা/১০৮৭; মিশকাত হা/১৩৮৮; ছহীহুল জামে‘
হা/৬৪০৫।
[23].
বুখারী হা/৯২৯, ৩২১১; মুসলিম হা/৮৫০; মিশকাত হা/১৩৮৪।
[24].
মুসলিম হা/৮৫৭; ‘খুৎবা শ্রবণ করা ও নীরব থাকার ফযীলত’
অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১৩৮২।
[25].
মুসলিম হা/৮৫৭; ‘খুৎবা শ্রবণ করা ও নীরব থাকার ফযীলত’
অনুচ্ছেদ; আবু দাউদ হা/১০৫০; মিশকাত হা/১৩৮৩।
[26].
মুসলিম হা/৮৫১; ‘খুৎবা শ্রবণ করা ও নীরব থাকার ফযীলত’
অনুচ্ছেদ; ইবনু মাজাহ হা/১১১০; নাসাঈ হা/১৪০২।
[27].
আবু দাউদ হা/১১১৮; নাসাঈ হা/১৩৯৯; ছহীহুল জামে‘
হা/৭১৪।
[28].
বুখারী হা/৮, ৪৫১৪; মুসলিম হা/১৬; তিরমিযী হা/২৬০৯।
[29].
নাসাঈ হা/২১১৮; মিশকাত হা/১৯৬২; ছহীহুল জামে‘
হা/৫৫।
[30].
বুখারী হা/২৮৪০; মুসলিম হা/১১৫৩; মিশকাত হা/২০৫৩।
[31].
নাসাঈ হা/২২৫৪; ছহীহাহ হা/২২৬৭, ২৫৬৫; ছহীহুল জামে‘
হা/৬৩৩০।
[32].
বুখারী হা/১৯৬৯; মুসলিম হা/১১৫৬; নাসাঈ হা/২৩৫১; মিশকাত হা/২০৩৬।
[33].
বুখারী হা/১৯৭০; নাসাঈ হা/২১৭৯।
[34].
তিরমিযী হা/৭৩৬ ইবনু মাজাহ হা/১৬৪৮; নাসাঈ হা/২১৭৫, ২৩৫২; মিশকাত হা/১৯৭৬, সনদ
ছহীহ।
[35].
আবু দাউদ হা/২৪৩৫; তিরমিযী হা/৭৩৬; নাসাঈ হা/২১৭৮, সনদ ছহীহ।
[36].
ইবনু মাজাহ হা/১৬৫১; তিরমিযী হা/৭৩৮; মিশকাত হা/১৯৭৬, সনদ ছহীহ।
[37].
মুসলিম হা/১১৬৪; তিরমিযী হা/৭৫৯; ইবনু মাজাহ হা/১৭১৫; মিশকাত হা/১৯৪৯; ছহীহুল জামে‘
হা/৬৩২৭।
[38].
ইবনু মাজাহ হা/১৭২৭; তিরমিযী হা/৭৫৭, সনদ ছহীহ।
[39].
তিরমিযী হা/৭৬২; ইবনু মাজাহ হা/১৭০৮; ছহীহ আত-তারগীব হা/১০৩৫; ।
[40].
তিরমিযী হা/৭৬১, সনদ হাসান ছহীহ।
[41]. মুসলিম হা/১১৬০; মিশকাত হা/২০৪৬।
[42].
মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৪৬; তিরমিযী হা/৭৪৯, সনদ ছহীহ; ইবনু মাজাহ হা/১৭৩০।
[43].
বুখারী হা/২০০৪।
[44].
বুখারী হা/২০০৬।
[45].
বুখারী হা/১৮৯৩, ২০০১, ২০০২, ৩৮৩১, ৪৫০২, ৪৫০৪।
[46].
আশূরায়ে মুহাররম ও আমাদের করণীয়, পৃঃ ৩, টীকা-৮ দ্রঃ।
[47].
মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৪৬, ৪/২৫১।
[48].
বুখারী হা/১৯৮০।
[49].
তিরমিযী হা/৭৪৭, সনদ ছহীহ।
[50].
মুসলিম হা/২৬৮৯; মিশকাত হা/২২৬৭; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৫০২।
[51].
তিরমিযী হা/৩৩৭৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৭৯০; মিশকাত হা/২২৬৯।
[52].
বুখারী হা/৭৪০৫; মিশকাত হা/২২৬৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৪৮৭।
[53].
বুখারী হা/৬৪০৭; মিশকাত হা/২২৬৩; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৫০২।
[54].
মুসলিম হা/৭৭৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/৪৩৮।
[55].
সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩১৬২; ছহীহ আত-তারগীব হা/৬১০।
[56].
আবুদাউদ হা/৫০৮২; তিরমিযী হা/৩৫৭৫; নাসাঈ হা/৫৪২৮, সনদ হাসান।
[57].
মুসলিম হা/২৭২৩; মিশকাত হা/২৩৮১, ‘সকাল-সন্ধ্যায় ও নিদ্রা
যাওয়ার সময় কি বলবে’ অনুচ্ছেদ।
[58].
আবুদাঊদ হা/৫০৬৮; তিরমিযী হা/৩৩৯১; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৬৮; মিশকাত হা/২৩৮৯, সনদ ছহীহ।
[59].
বুখারী হা/৬৩০৬; আবু দাউদ হা/৫০৭০; মিশকাত হা/২৩৩৫, ‘তওবা
ও ইস্তিগফার’ অনুচ্ছেদ।
[60].
বুখারী হা/৭৫৬৩ ‘তাওহীদ’
অধ্যায়; মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮, ‘দো‘আ
সমূহ’
অধ্যায়, ‘তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠের
ছওয়াব’
অনুচ্ছেদ।
[61].
মুসলিম হা/৩৭৩; আবু দাউদ হা/১৮; তিরমিযী হা/৩৩৮৪; ইবনু মাজাহ হা/৩০২; মিশকাত
হা/৪৫৬।
[62].
তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩০৬।
[63].
তিরমিযী হা/৪৮৫-এর আলোচনা দ্রঃ।
[64].
বুখারী তরজমাতুল বাব-১০; ফতহুল বারী ৮/৫৩৩; ইবনে কাছীর ৬/৪৫৭, সূরা আহযাব ৫৬
আয়াতের তাফসীর দ্রঃ।
[65].
নাসাঈ হা/১২৯৭; মিশকাত হা/৯২২; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৬৫৭-৫৮।
[66].
মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৫৯, ৯৬১ ‘ছালাত
পরবর্তী যিকর’ অনুচ্ছেদ।
[67].
মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬০।
[68].
মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৩, ‘ছালাত’
অধ্যায়, ‘ছালাতের পর যিকর’
অনুচ্ছেদ।
[69].
আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৪৯।
[70].
মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৬২।
[71].
মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৬-৬৭, ‘ছালাত’
অধ্যায়, ‘ছালাত পরবর্তী যিকর’
অনুচ্ছেদ।
[72].
মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৭।
[73].
সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২।
[74].
বুখারী হা/২৩১১, ৩২৭৫, ৫০১০; মিশকাত হা/৯৭৪, ‘ছালাত’
অধ্যায়; মিশকাত হা/২১২২-২৩ ‘কুরআনের ফাযায়েল’
অধ্যায়।
[75].
মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০১ ‘দো‘আ
সমূহ’
অধ্যায়, ‘তাসবীহ ও হামদ পাঠের ছওয়াব’
অনুচ্ছেদ; আবুদাঊদ হা/১৫০৩।
[76].
তিরমিযী, মিশকাত হা/২৪৭৮ ‘দো‘আ
সমূহ’
অধ্যায়, ‘আশ্রয় প্রার্থনা’
অনুচ্ছেদ।
[77].
মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৮৪ অধ্যায়-ঐ, ‘সারগর্ভ দো‘আ’
অনুচ্ছেদ।
[78].
তিরমিযী, মিশকাত হা/২৪৪৯, ‘দো‘আ
সমূহ’
অধ্যায়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দো‘আ’
অনুচ্ছেদ; ছহীহাহ হা/২৬৬।
[79].
তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩ ‘দো‘আসমূহ’
অধ্যায়, ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা’
অনুচ্ছেদ; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭২৭।
[80].
মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫ ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা
করা’
অনুচ্ছেদ।
[81].
আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৬৯, ‘ছালাত’
অধ্যায়-৪, ‘ছালাত পরবর্তী যিকর’
অনুচ্ছেদ।
[82].
মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২১৩২ ‘কুরআনের
ফাযায়েল’ অধ্যায়।
[83].
বুখারী, রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৩; মিশকাত হা/২৩২৩।
[84].
মুসলিম; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৪।
[85].
মুসলিম হা/২৭৪৪; মিশকাত হা/২৩৫৮; ছহীহুল জামে‘
হা/৫০৩৩।
No comments