তুমি কি জানো সেটা কী? এক বিদীর্ণকারী নক্ষত্র —আত-তারিক

শপথ আকাশের এবং রাতে যা হঠাৎ করে আসে তার তুমি কি জানো সেটি কী? এক বিদীর্ণকারী নক্ষত্র এমন কেউ নেই যার জন্য তত্ত্বাবধায়ক নেই তাই মানুষ ভেবে দেখুক কীসের থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে বের হওয়া তরল থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্যে থেকে সে বেরিয়ে আসে অবশ্যই তিনি পারেন তাকে পুনরায় জীবন দিতেআত-তারিক -

শপথ আকাশের এবং রাতে যা হঠাৎ করে আসে তার তুমি কি জানো সেটা কী? এক বিদীর্ণকারী নক্ষত্র

এই আয়াতগুলো যুগে যুগে কৌতূহলী মানুষের মধ্যে অনেক চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। কোন সেই নক্ষত্র যা রাতের বেলা হঠাৎ করে আসে? এমন এক কল্পনাতীত উজ্জ্বল নক্ষত্র, যার আলো মহাবিশ্বে কোটি কোটি মাইল পাড়ি দিয়ে, সকল বাধা বিদীর্ণ করে রাতের আকাশে জ্বল জ্বল করতে থাকে? তারিক طاِرِق অর্থ রাতের বেলা হঠাৎ করে আসা, অথবা রাতের আধারে খট খট করে দরজায় টোকা দেওয়া। অপ্রত্যাশিত এমন কিছু, যা মানুষকে চিন্তায় ফেলে দেয়। কোন সেই নক্ষত্র যা রাতের বেলা হঠাৎ করে এসে মানুষকে চিন্তায় ফেলে দেয়?[][][][১৭][১৮]

একটি নক্ষত্র যখন তার ভেতরের প্রচণ্ড চাপে বিস্ফোরিত হয়ে যায়, অথবা আশপাশ থেকে খুব বেশি পদার্থ ঢুকে গেলে তারপর বিস্ফোরিত হয়ে যায়, তখন সেটি এতই উজ্জ্বল হয় যে, মহাবিশ্বের সুদূর প্রান্ত থেকেও তাকে দেখা যায়। মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সির উজ্জ্বলতাকে হারিয়ে এটি রাতের আকাশে কয়েক দিন, অনেক সময় কয়েক মাস জ্বল জ্বল করতে থাকে। একে সুপারনোভা বলে। সুপারনোভা অনেক সময় এতই উজ্জ্বল হয় যে, দিনের বেলায়ও তা দেখা যায়। প্রতি হাজার বছরে কয়েকবার এরকম ঘটনা পৃথিবীর আকাশে খালি চোখে দেখা যায়

একটি নক্ষত্র যখন বিস্ফোরিত হয়, তখন তা তীব্র শক্তি বিকিরণ করে। ভীষণ বেগে বিপুল পরিমাণের ভারি মৌলিক পদার্থ চারিদিকে ছুড়ে দিয়ে আশেপাশের নীহারিকার ভেতরে জমে থাকা গ্যাসের মধ্যে বিক্রিয়া শুরু করে নতুন নক্ষত্র তৈরির সূচনা করে। একই সাথে আশেপাশের অনেক নক্ষত্রকে প্রবল বেগে আঘাত করে তাদের অংশবিশেষ ছিটকে দিয়ে গ্রহ সৃষ্টির সূচনা করে। তারপর অনেক গ্রহে এটি ভারি মৌলিক পদার্থ ছুড়ে দিয়ে সেখানে প্রাণের সূচনা করে। আমাদের পৃথিবীতে লোহাসহ অনেক ভারি মৌলিক পদার্থ একদিন এসেছিল একটি নক্ষত্রের বিস্ফোরণের ফলে। নক্ষত্র বিস্ফোরণই পৃথিবীতে প্রাণের সূচনা করে দিয়েছিল। যে অক্সিজেন আমরা নিঃশ্বাসে নেই, যে কার্বন দিয়ে আমাদের দেহ তৈরি, যে লোহা আমাদের রক্তের প্রতিটি লোহিত কণিকায় রয়েছেএগুলো সবই এসেছে এক বা একাধিক সুপারনোভা থেকে।[৪৩২]

হতে পারে আল্লাহ تعالى হয়ত এই নক্ষত্র বিস্ফোরণ বা সুপারনোভাকে ইঙ্গিত করেছেন এই আয়াতে, কারণ এর সাথে তারিক-এর বৈশিষ্ট্যগুলো মিলে যায়) হঠাৎ করে আসে এবং চলে যায়, ) এর আলো মহাবিশ্বের সব বাধা অতিক্রম করেও এসে পৌঁছায়, ) হঠাৎ এক উজ্জ্বল কিছু আকাশে আসলে তা মানুষকে চিন্তায় ফেলে দেয় যে, সেটা কী? কোনো বিপদ কি আসছে? আকাশে কেউ কী ভেসে আছে?

নিঃসন্দেহে সুপারনোভা মহাবিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সুপারনোভার মাধ্যমেই আল্লাহ تعالى মহাবিশ্বে বহু সৃষ্টির সূচনা করেন। এর মাধ্যমেই তিনি হঠাৎ করে অনেক গ্রহ ধ্বংস করে দেন

অথবা হতে পারে, আল্লাহ تعالى সব উজ্জ্বল নক্ষত্রের শপথ করেছেন, কারণ নক্ষত্রের আলো কোটি কোটি মাইল পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুতগামী যান ব্যবহার করে সবচেয়ে কাছের নক্ষত্রে পৌঁছুতেও লক্ষ বছর লাগবে। শুধু দূরত্বই নয়, যাত্রা পথে রয়েছে অজস্র বাধা। এই সব বাধা অতিক্রম করে নক্ষত্রের আলো সবসময় পৃথিবীতে এসে পড়ছে। এর মধ্যে চিন্তাশীল মানুষদের জন্য যথেষ্ট চিন্তার খোরাক রয়েছে।[]

এমন কেউ নেই যার জন্য তত্ত্বাবধায়ক নেই

আকাশ এবং তারিক-এর শপথ করে আল্লাহ تعالى বলছেন যে, প্রতিটি আত্মার উপর তত্ত্বাবধায়ক আছে। আমাদের প্রতিটি কাজ লক্ষ করা হচ্ছে। আমাদের মাথার উপরে যেমন আকাশ সবসময় রয়েছে, তেমনি এই তত্ত্বাবধায়করা আমাদের উপর সবসময় লক্ষ্য রাখছেন। তারিক যেমন মহাবিশ্বে কল্পনাতীত দূরত্ব অতিক্রম করে, বিশাল সব বাধা বিদীর্ণ করে পৃথিবীর আকাশে এসে জ্বল-জ্বল করে, তেমনি আমরা যেখানেই থাকি না কেন, এই তত্ত্বাবধায়করা সবকিছু ভেদ করে আমাদেরকে ঠিকই দেখতে পান। আমরা যেন কখনো মনে না করি যে, দরজা বন্ধ করে যখন চুপেচাপে কুকর্ম করি, তখন আমাদেরকে কেউ দেখতে পায় না। আমাদের তত্ত্বাবধায়করা সব লক্ষ্য রাখছেন।[][][১৭][১৮]

সামান্য এক ফোটা তরল থেকে একসময় মানুষের একটি ভ্রূণ তৈরি হয়। এই ভ্রূণটি মায়ের গর্ভের দেয়ালকে পরিবর্তন করে নেয়, যেন সে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিকর রক্ত পেতে পারে। তারপর এককোষী ভ্রূণটি কোষ বিভাজনের মাধ্যমে দুটি, দুটি থেকে চারটি, চারটি থেকে আটটি, এভাবে বাড়তে থাকে। এর মধ্যে একটি কোষ যাত্রা শুরু করে চোখ তৈরি করার জন্য। সেই কোষটি বিশেষ একটি জায়গায় পৌঁছে সেখান থেকে চোখ তৈরি করা শুরু করে। কোষটি কীভাবে যেন অন্যান্য কোষের সাথে যোগাযোগ করে বুঝে যায় যে, সে এখন দেহের কোন অবস্থানে আছে এবং এই অবস্থানে তাকে ঠিক কী করতে হবে।  তারপর কোষগুলো একসময় কীভাবে যেন বুঝে যায় যে, চোখ তৈরি করার শেষ, এখন নাক তৈরি করতে হবে

একটি মানবদেহ তৈরির এই যে বিশাল জটিল প্রক্রিয়া, কোটি কোটি কোষকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা, প্রতিটি কোষকে জানিয়ে দেয়া সে কোথায় আছে, কী করতে হবেএগুলো দেখলে মনে হয়, নিশ্চয়ই কোনো তত্ত্বাবধায়ক রয়েছেন, যে বা যারা কোটি কোটি কোষকে সঠিক পথনির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে

তাই মানুষ ভেবে দেখুক কীসের থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে বের হওয়া তরল থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্যে থেকে সে বেড়িয়ে আসে

মানুষ ভেবে দেখুক তার সূচনা হয় কত তুচ্ছ ব্যাপার থেকে। সামান্য কিছু তরল, যার ভেতরে কোনো প্রাণ নেই, সেখান থেকেই একটি পুর্ণাঙ্গ প্রাণী সৃষ্টি হয়। কীভাবে সামান্য কিছু তরলের মধ্যে একটি পুরো মানুষ তৈরি করার ডিজাইন সংরক্ষণ করা থাকে? কীভাবে তা বাবা-মা বৈশিষ্ট্যগুলো রেকর্ড করে রাখে? কীভাবে সামান্য একটি তরল থেকে হাত, পা, মাথা গজিয়ে, জায়গামতো চোখ, কান, মুখ বসে, নিখুঁত এক মানুষ তৈরি হয়?

এই আয়াতের অর্থ নিয়ে বিপুল বিতর্ক হয়েছে, কারণ এই আয়াতের অর্থ অনেকে করেছেন, “সজোরে বের হওয়া বীর্য থেকে, যা নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্য থেকে বেড়িয়ে আসেএই আয়াত নিয়ে প্রাচীন তাফসিরগুলোতে বিজ্ঞান বিরোধী ব্যক্তিগত মতামত রয়েছে, যা ইসলাম বিদ্বেষীরা কুরআনকে ভুল প্রমাণ করতে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। ইসলাম বিদ্বেষীরা দাবি করে যে, বীর্য যেহেতু যৌনাঙ্গ থেকে বের হয়, নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্য থেকে নয়, তাই কুরআনে ভুল কথা লেখা আছে। তারা এটাও দাবি করে যে, প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একই ভুল কথা বলে গেছে। কুরআনে আসলে সেটাই কপি করা হয়েছে

প্রথমত, এই আয়াতে মোটেও বীর্য, যার আরবি মানী, তার উল্লেখ নেই। মানী অন্য সূরাহ্‌য় ব্যবহার করা হয়েছে। এই সূরাহ্‌য় তরল-এর কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিজ্ঞানমনস্কদের আসলে চিকিৎসা-বিজ্ঞান সম্পর্কেও ভালো ধারনা নেই, কারণ থাকলে তারা জানতো যে, যে তরল বের হয়, তার মধ্যে মাত্র চার থেকে সাত শতাংশ থাকে বীর্য। বাকি তরলে নানা ধরনের যৌগ, পিচ্ছিল করার জন্য শ্লেষ্মা, নারী অঙ্গের এসিডিটি কমিয়ে শুক্রাণুর ধ্বংস প্রতিরোধ করার জন্য ক্ষারীয় যৌগ ইত্যাদি অনেক কিছুই থাকে। এগুলোর কোনটাই যৌনাঙ্গ থেকে বের হয় না। বরং এগুলো সব তৈরি হয় নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মাঝামাঝি থাকা বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গ থেকে।[৪৩৩]

তৃতীয়ত, এই আয়াতের অনুবাদ এটাও হয় যে, “নিতম্ব এবং পাঁজরের হাড়ের মধ্যে থেকে সে বেড়িয়ে আসে।” —এখানে তরলের বের হওয়ার কথা নয়, বরং মানুষের বের হওয়ার কথা বলা আছে। যেভাবে কিনা এর পরের আয়াতেইসেবলতে মানুষের কথা বলা হয়েছে। আগের এবং পরের আয়াতের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখলে, এখানে আসলে মানুষের বের হওয়ার কথাই যুক্তিযুক্ত হয়, তরলের বের হওয়া নয়

অবশ্যই তিনি পারেন তাকে পুনরায় জীবন দিতে

আল্লাহ تعالى যদি মানুষের দেহ তৈরির এত জটিল কাজটি প্রথমবার করতে পারেন, তাহলে তিনি কি আরেকবার সেটা করতে পারবেন না? প্রথম বার কোনো কিছু বানানো বেশি কঠিন, নাকি দ্বিতীয়বার?

অনেকে মনে করে যে, মানুষের অস্তিত্ব শুধুমাত্র তার দেহের মধ্যেই সীমিত। দেহ ধ্বংস হয়ে গেলে আর কোনোভাবেই একটি মানুষকে পুনরায় তৈরি করা সম্ভব নয়। মানুষের দেহের কাঁচামাল ব্যবহার করে হয়ত আরেকটি ভিন্ন কোনো মানুষ তৈরি করা যাবে। কিন্তু কখনোই একজন মানুষকে হুবহু একইভাবে আবার তৈরি করা যাবে না। অর্থাৎ মানুষের পুনরুত্থান হওয়া সম্ভব নয়

তাদের এই ধারনার ভিত্তি হচ্ছে: একজন মানুষের সারা জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব, চেতনাএই সব কিছুই আছে তার মস্তিষ্কে। তাই মস্তিষ্ক ধ্বংস হয়ে গেলে, কোনোভাবেই আরেকটি মস্তিষ্কে হুবহু একই অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব এবং চেতনা তৈরি করা সম্ভব নয়।মানুষের এই ধারনার ভিত্তি হলো, মানুষ মনে করে যে, মহাবিশ্বে বস্তু এবং শক্তি ছাড়া আর মৌলিক কিছুই নেই। সবকিছুই সৃষ্টি হয় বস্তু এবং শক্তির মাধ্যমে। সৃষ্টিজগত চার মাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধদৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, সময়

তারা ধরে নিয়েছে যে, বস্তু এবং শক্তি নিজেরাই পরিকল্পনা করে একে অন্যকে কোনোভাবে ব্যবহার করে পুরো মহাবিশ্ব তৈরি করেছে। এদের ভেতরে এতই সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা থাকে যে, এরা মহাবিশ্বের মত কল্পনাতীত সুশৃঙ্খল বিশাল এক সৃষ্টিজগত নিজে থেকেই সৃষ্টি করতে পারে।এই ধারনায় বিশ্বাসী মানুষদের দাবি হচ্ছে যে, মানুষের যে চেতনা রয়েছে, সেটা আসলে মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা বস্তু এবং শক্তির সমন্বয়ে তৈরি। তারা জানে না যে, মানুষের চেতনা কী, সেটা কোথায় থাকে, কীভাবে তার সৃষ্টি হয়এটা বিজ্ঞানের অন্যতম বড় প্রশ্ন। এর সমাধান এখনো পাওয়া যায়নি।[৪৩৪][৪৩৫]

বিংশ শতাব্দীর পদার্থ বিজ্ঞানে তিনটি বড় অগ্রগতি হলো কোয়ান্টাম ফিজিক্স, স্ট্রিং-থিওরি এবং ইনফরমেশন থিওরি। পদার্থ বিজ্ঞানের বহু সমস্যা রয়েছে যেগুলোর এখনো কোনো সমাধান নেই। শুধুই বস্তু এবং শক্তি সেই সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে পারে না। সেই ঘটনাগুলোকে ব্যখ্যা করার জন্য মহাবিশ্বে আরেকটি মৌলিক ব্যাপার দরকার এবং আরও কয়েকটি মাত্রা দরকার। ইনফরমেশন থিওরি দাবি করে যে, মহাবিশ্বের মৌলিক ব্যাপার বস্তু এবং শক্তি নয়, বরং সেটি হচ্ছেতথ্য এই তথ্য-তত্ত্ব অনুসারে সবকিছু হয়ত বস্তু এবং শক্তি দিয়ে তৈরি, কিন্তু কীভাবে তা তৈরি করতে হবে এবং কীভাবে তা অস্তিত্ব নিয়ে থাকবেসেটা হচ্ছে তথ্য

যেমন, ডিএনএ তৈরি বস্তু এবং শক্তি দিয়ে। কিন্তু ডিএনএ-এর মধ্যে যে নির্দেশমালা দেওয়া আছে, তা হচ্ছে তথ্য। এই তথ্য পুরোপুরি নির্বোধ কিছু বস্তু এবং শক্তিকে বলে দেয় কীভাবে একটি প্রাণ তৈরি করতে হবে। আবার, কোষ তৈরি বস্তু এবং শক্তি দিয়ে। কিন্তু কোষের মধ্যে যে জটিল সব প্রোগ্রাম দেওয়া হয়েছে ডিএনএ পড়ে, বুঝে, তারপর সে অনুসারে কাজ করার, এমনকি ডিএনএ-তে ত্রুটি ধরা পড়লে তার অনেকখানি সংশোধন করারএগুলো হচ্ছে তথ্য। এই তথ্যই বুদ্ধিহীন কোষকে দিয়ে পরিকল্পনা মোতাবেক এমন সব জটিল কাজ করায়, যা বোঝার জন্য উচ্চপর্যায়ের বুদ্ধি দরকার

পানির অণু শক্তি দিয়ে তৈরি। কিন্তু পানির অণুর যে বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো রয়েছে, যা প্রকৃতিতে আর কোনো তরলের নেইবিশেষ হাইড্রোজেন বন্ধন, চার ডিগ্রি তাপমাত্রায় একই সাথে কঠিন, তরল এবং বায়বীয় অবস্থায় থাকার বিশেষ গুণ, অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রায় বাষ্প হওয়া, সবচেয়ে বেশি পৃষ্ঠ টানএগুলোর সবই প্রাণের বিকাশের জন্য বিশেষভাবে পানিতে রয়েছেএগুলো সবই হচ্ছে তথ্য। পানির অণুকে দেখলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, একে বানানোই হয়েছে প্রাণ সৃষ্টির জন্য।[৪৩৬]

একারণেই অনেক বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন যে, এই মহাবিশ্ব আসলে এক বিশাল যন্ত্র, যা তাকে দেওয়া তথ্য অনুসারে চলে। মহাবিশ্বের সূচনা থেকে শুরু করে, বস্তু, শক্তি সৃষ্টি, নক্ষত্র, গ্রহ, কৃষ্ণগহ্বর ইত্যাদি তৈরি করার পরিকল্পনা এবং প্রাণ সৃষ্টির যাবতীয় পরিকল্পনা এবং ছকসব কিছুই তথ্য আকারে মহাবিশ্বকে দেওয়া হয়েছে। মহাবিশ্ব এক বিশাল কম্পিউটারের মতো শুধুই সেই তথ্য প্রক্রিয়া করছে।[৪৩৪]

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, এই তথ্যের উৎস কোথায়? কে বা কী এই বিশাল পরিমাণের তথ্যের সূচনা করলো? এই তথ্য সংরক্ষণ হয় কীভাবে? এই তথ্য শেষ পর্যন্ত যায় কোথায়?

একজন মানুষ শুধুই কিছু বস্তু এবং শক্তির আধার নয়, একই সাথে তথ্যের আধার। দেহের মৃত্যু হলে তার দেহের মধ্যে থাকা বস্তু এবং শক্তি হয়ত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু তথ্য কোথায় যায়? এই তথ্যকে সংরক্ষণ করে রাখলে একই মানুষ আবারো তৈরি করা সম্ভব। সেই প্রযুক্তি মানুষের নেই। কিন্তু যে এই মহাবিশ্ব তৈরি করেছে, তার কাছে প্রযুক্তির কোনো অভাব নেই। সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে মানুষের যাবতীয় তর্ক শুনলে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তারা মনে করে সৃষ্টিকর্তা মানুষের থেকে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে হয়ত হাজার বা লক্ষ বছর এগিয়ে আছে, এর বেশি কিছু না। এই সব মানুষরা তাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতার কারণে কোনোভাবেই কল্পনা করতে পারে না যে, সৃষ্টিকর্তা বলতে আসলে কী পর্যায়ের ক্ষমতার ধারনা বোঝায়

যাদের মেনে নিতে কষ্ট হয় যে, তার দেহ যখন অণু পরমাণুতে পরিণত হয়ে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে যাবে, তারপর কীভাবে তাকে আবার হুবহু একইভাবে তৈরি করা সম্ভব এবং কীভাবে তার সমস্ত স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব? —তাদের সমস্যা হচ্ছে তাদের যাবতীয় চিন্তাভাবনা বস্তু এবং শক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে মৌলিক কোনো কিছু মহাবিশ্বে থাকতে পারে, যা তাদের অস্তিত্বকে ধরে রাখতে পারে, তা তাদের পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব নয়

যেদিন সব গোপন কিছুকে প্রকাশ করে দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। তখন মানুষের কোনো শক্তি থাকবে না, কোনো সাহায্যকারীও থাকবে না।
শপথ আকাশের যা ফিরিয়ে দেয়। শপথ মাটির যা ফেটে বের করে দেয়। নিঃসন্দেহে এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া বাণী। এটা কোনো হাঁসি-ঠাট্টার বিষয় নয়। নিশ্চয়ই তারা এক কৌশল ফাঁদছে। আমিও এক কৌশল ফাঁদছি। থাক, ছেড়ে দাও অবিশ্বাসীদের কিছুটা সময়ের জন্য।আত-তারিক -১৭

যেদিন সব গোপন কিছুকে প্রকাশ করে দিয়ে পরীক্ষা করা হবে তখন মানুষের কোনো শক্তি থাকবে না, কোনো সাহায্যকারীও থাকবে না

আমাদের পুরো অস্তিত্ব রেকর্ড করা হচ্ছে। একদিন এই রেকর্ড এক অভিনব প্রযুক্তিতে রিপ্লে করে দেখানো হবে। আমাদের প্রতিটি কথা, কাজ সেদিন আমরা অসহায়ের মতো দেখতে থাকবো। সেদিন মানুষের কোনো ক্ষমতা থাকবে না কারচুপি করার, কোনো কিছু ধামাচাপা দেয়ার। সমস্ত গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে। ছাত্র সংগঠন, ভাড়াটে মস্তান, টাকা খাইয়ে কিনে রাখা আইনের রক্ষককেউ পারবে না কোনো ধরনের সাহায্য করতে। আল্লাহর تعالى আদালতে কারো ক্ষমতা নেই জবাবদিহিতা এড়িয়ে যাওয়ার

শপথ আকাশের যা ফিরিয়ে দেয়

প্রতিদিন প্রায় এক ট্রিলিয়ন টন পানি, অর্থাৎ প্রায় দশ লক্ষ-কোটি টন পানি সূর্যের তাপে বাষ্প হয়ে আকাশে চলে যায়। তারপর প্রায় সেই একই পরিমাণ পানি এক সময় বৃষ্টি হয়ে আকাশ থেকে ফিরে আসে। এভাবে প্রতি বছর প্রায় সমান পরিমাণের পানি আকাশে যায় এবং আকাশ থেকে ফিরে আসে। যদি এই ভারসাম্য বজায় না থাকতো, তাহলে সমুদ্র, নদীনালা থেকে ক্রমাগত পানি কমতে কমতে সেগুলো শুকিয়ে যেত, না হলে বৃষ্টি বেশি হতে হতে একসময় আকাশ মেঘ শুন্য হয়ে যেত। কোনো এক অদ্ভুত উপায়ে পানির আকাশে উঠে যাওয়া এবং ফিরে আসার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে।[৪৩৭]

শপথ মাটির যা ফেটে বের করে দেয়

মাটির ভেতরে অন্ধকারে ডুবে থাকা একটি বীজ থেকে কীভাবে চারা হয়? আমরা জানি গাছ বড় হয় সূর্যের আলোর শক্তি ব্যবহার করে। কিন্তু মাটির ভেতরে থাকা বীজ তো কোনো আলো পাচ্ছে না। তাহলে সেটা থেকে চারা তৈরি হওয়ার শক্তি আসে কোথা থেকে? বীজ থেকে ছোট একটা কাণ্ড মাটি ফুঁড়ে বের হয়ে পাতা গজিয়ে সূর্যের আলো আহরণ করা পর্যন্ত যে বিপুল পরিমাণের শক্তি দরকার, তা ছোট একটা বীজের মধ্যে গাছ কীভাবে ঢুকিয়ে দেয়?

বীজ থেকে চারা বের হওয়ার সময় সেটাকে মাটির উপরে উঠতে হবে, কীভাবে তা বুঝতে পারে? একটা বীজ কীভাবে বোঝে উপর দিক কোনটা? এছাড়াও কিছু বীজ বিশেষ তাপমাত্রা, আদ্রতা এবং সূর্যের আলোর প্রখরতায় চারা জন্ম দেয়, না হলে দেয় না। তাপমাত্রা, আদ্রতা, আলোর তীব্রতা মাপার যন্ত্র বীজের মধ্যে এলো কী করে?

একটি ছোট বীজের মধ্যেও আল্লাহ تعالى কত জটিল ছক এবং পরিকল্পনা দিয়ে রেখেছেন। সামান্য এক একেকটি বীজ যেন একেকটি ছোট ফ্যাক্টরি, যার নিজস্ব জেনারেটর আছে, কাঁচামাল সংরক্ষণ করার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদাম আছে এবং আশেপাশের আবহাওয়া পরিমাপ করার জন্য এন্টেনা আছে। নানা ধরনের তথ্য প্রক্রিয়া করে সঠিক সময়ে অঙ্কুরদগম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র কম্পিউটারও আছে

একইভাবে, মাটির মধ্যেও বিশাল পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষ এখন পর্যন্ত তার সামান্যই বের করতে পেরেছে। মাটির গঠন, মাটিতে মিশে থাকা রাসায়নিক যৌগ, পানির প্রবাহের ব্যবস্থা, অণুজীব ধরে রাখার ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে হাজার বছর ধরে গবেষণা হচ্ছে। মৃত্তিকা-বিজ্ঞান নামে বিজ্ঞানের বিশাল শাখা আছে মাটি নিয়ে গবেষণা করার জন্য। আল্লাহ যখন মাটির বের করে দেওয়া বৈশিষ্ট্যের শপথ নেন, তার মানে মাটির মধ্যে বিরাট সব ব্যাপার রয়েছে। চিন্তাশীল মানুষ যেন চিন্তা করে দেখে

মাটির বের করে দেওয়ার চরম নিদর্শন আমরা দেখবো কিয়ামতের দিন। সেদিন পৃথিবী তার ভেতরের সব তথ্য বের করে দেবে। সমস্ত মানুষকে সে পুনরায় তৈরি করে ছিটকে বের করে দেবে। সুরাহ যিলযাল- আল্লাহ تعالى সেই ভয়ংকর দিনের চিত্র আমাদেরকে বলে দিয়েছেন

নিঃসন্দেহে এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া বাণী এটা কোনো হাঁসি-ঠাট্টার বিষয় নয়

এরপরও কিছু মানুষের কাছে পুনরুত্থান, কিয়ামতের বিচার, জান্নাত, জাহান্নামএগুলো সব রূপকথার গল্প মনে হয়। তারা মনে করে, এগুলো মানুষের বানানো ধারনা, যা তারা উদ্ভাবন করেছে নিজেদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য। দুনিয়াতে যেহেতু মানুষ অনেক অন্যায়, অবিচার সহ্য করে একসময় মারা যায়, দুর্বল মানুষ শক্তিশালী মানুষের কাছে অসহায়ের মতো নির্যাতিত হয়তাই নিজেদেরকে কিছুটা সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য মৃত্যুর পরে যে এক জীবন আছে, যেই জীবনে গিয়ে সে শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পাবে, তার সাথে যারা অন্যায় করেছে, তাদের উচিত শাস্তি হবেএই সব কাল্পনিক ধারনা নিয়ে এসেছে। এগুলো আসলে হতাশাকর এই জীবনে কিছু আশা এবং সান্ত্বনার বুলি ছাড়া আর কিছু নয়। স্বল্পশিক্ষিত, চিন্তার গভীরতা নেই এমন মানুষেরাই এই সব হাস্যকর ধারনায় বিশ্বাস করে

যাদের জ্ঞান আছে, প্রজ্ঞা আছে এবং সর্বোপরি বিবেক-বুদ্ধি আছে, তারা কুরআনে দেওয়া তথ্য এবং যুক্তির গভীরতা উপলব্ধি করে ঠিকই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে যে, এটা কোনোভাবেই মানুষের বানানো হতে পারে না। এটা নিঃসন্দেহে মানুষ থেকে উচ্চতর কোনো সত্তার বাণী। সেই উচ্চতর সত্তা যদি নিজেকে মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করে, তাহলে তা অস্বীকার করার কোনো যুক্তি নেই। যখন এই সিদ্ধান্তে কেউ পৌঁছাবে, তখন সে মেনে নেবে যে, এই বাণীর উপরে আর কোনো কথা থাকতে পারে না। এটাই চুড়ান্ত মত। এর বিপরীতে আমাদের মতের কোনোই মূল্য নেই

সুতরাং যারাই ধর্ম নিয়ে সন্দেহে আছে, তাদের কাজ হচ্ছে যাবতীয় ইতিহাস, দলীয় মতামত, মুসলিমরা কী অন্যায় করছেএগুলো সব বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কুরআনের বাণীকে নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে দেখা। যদি কুরআনের বাণী তার কাছে প্রমাণিত হয় যে, এটা মানুষের বুদ্ধিমত্তার ঊর্ধ্বে বাণী, তাহলে সেই বাণীকে উপেক্ষা করার পেছনে আর কোনো যুক্তি থাকতে পারে না

নিশ্চয়ই তারা এক কৌশল ফাঁদছে আমিও এক কৌশল ফাঁদছি থাক, ছেড়ে দাও অবিশ্বাসীদের কয়েকটা দিনের জন্য

ভাই, ইসরাইলীরা ব্যবসা বাণিজ্য, মিডিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা সব দখল করে ফেলছে। সব জায়গায় তারা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে। ইলিউমিনাটি সংগঠন আজকে পৃথিবীর সব বড় শক্তিগুলোর কলকব্জা নাড়ছে। তাদের পরিকল্পনা থেকেই সিরিয়া, গাজা, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, কাশ্মীরসহ সব জায়গায় মুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইলিউমিনাটি ব্যাংকাররা বিশ্বের সকল দেশের ঋণ ব্যবস্থাকে দখলে নিয়েছে। কাফিররা আমাদের অগোচরে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম সব কিছু ধ্বংস করে দেয়ার জন্য বিপুল লোকবল এবং পুঁজি নিয়ে কাজ করছে।

করুক। আল্লাহও تعالى তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করে রেখেছেন। সময় আসলেই আমরা আল্লাহর تعالى পরিকল্পনা দেখতে পারবো। তাদের বহু চক্রান্ত আল্লাহ تعالى আগেও ধ্বংস করে দিয়েছেন, ভবিষ্যতেও দেবেন। আমাদের অগোচরে প্রতিনিয়ত তাদের কত মতলব, উদ্যোগ বিফল হয়ে যাচ্ছে, সেটা হয়ত আমরা জানিও না। যে বিশাল পরিমাণের লোকবল এবং পুঁজি নিয়ে তারা কাজ করছে, তাতে মুসলিমদের এতদিনে সংখ্যালঘু জাতিতে পরিণত হওয়ার কথা। সেটা তো হচ্ছেই না, বরং পাশ্চাত্যে সবচেয়ে দ্রুত যে ধর্মের প্রসার হচ্ছে, তা হলো ইসলাম। নিশ্চয়ই সেটা আল্লাহরই تعالى পরিকল্পনার ফসল

তাই, অমূলক দুশ্চিন্তা না করে আমাদের এই আয়াত থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে, কাফিররা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ইসলামের ক্ষতি করার জন্য সব সময়ই চেষ্টা করেছে। আমাদেরকেও সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী হওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মধ্যে যত বিরোধ, দলাদলি, বিভক্তি হবে, আমরা তত দুর্বল হয়ে যাবো। নিজেদের মধ্যে পার্থক্যগুলো দূরে রেখে শত্রুদের মোকাবেলায় আমাদের এক হতে হবে

তবে, এই ভেবে বসে থাকলে হবে না যে, আল্লাহ تعالى তো কৌশল করছেনই। আমার আর কী করার আছে? আমি বসে বসে দেখি কীভাবে সব কাফিরদের আল্লাহ تعالى একে একে ধ্বংস করে দেন।না, বরং আমাদেরকে কুরআন পড়ে দেখতে হবেকীভাবে আগের প্রজন্মের মুসলিমরা কাফিরদের বিরুদ্ধে এক হয়ে সংগ্রাম করে গেছে মুসলিম জাতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য। তখন আল্লাহর تعالى পরিকল্পনা, কৌশল সবই ছিল। কিন্তু সেগুলোর কিছুটা বাস্তবায়ন হয়েছে মুসলিমদের ত্যাগ, উদ্যোগ এবং নিরলস সংগ্রামের মধ্য দিয়েই। তাই, আল্লাহর تعالى পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা যে যতভাবে পারি নিজেদেরকে উৎসর্গ করবো। কিয়ামতের দিন গিয়ে যেন বলতে পারি, মুসলিমদের রক্ষায় এবং ইসলামের প্রসারে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলাম। শুধুই অন্যের অর্জনের সুফল ভোগ করছিলাম না

ওমর আল-জাবির


[] বাইয়িনাহ এর কুরআনের তাফসীর। [] ম্যাসেজ অফ দা কুরআনমুহাম্মাদ আসাদ। [] তাফহিমুল কুরআনমাওলানা মাওদুদি। [] মারিফুল কুরআনমুফতি শাফি উসমানী। [] মুহাম্মাদ মোহার আলিA Word for Word Meaning of The Quran [] সৈয়দ কুতবIn the Shade of the Quran [] তাদাব্বুরে কুরআনআমিন আহসান ইসলাহি। [] তাফসিরে তাওযীহুল কুরআনমুফতি তাক্বি উসমানী। [] বায়ান আল কুরআন: ইসরার আহমেদ। [১০] তাফসীর উল কুরআনমাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি [১১] কুরআন তাফসীরআব্দুর রাহিম আস-সারানবি [১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ। [১৩] তাফসির ইবন আব্বাস। [১৪] তাফসির আল কুরতুবি। [১৫] তাফসির আল জালালাইন। [১৬] লুঘাতুল কুরআনগুলাম আহমেদ পারভেজ। [১৭] তাফসীর আহসানুল বায়ানইসলামিক সেন্টার, আল-মাজমাআহ, সউদি আরব [১৮] কুরআনুল কারীমবাংলা অনুবাদ সংক্ষিপ্ত তাফসীরবাদশাহ ফাহাদ কুরআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। [১৯] তাফসির আল-কাবির। [২০] তাফসির আল-কাশ্‌শাফ

No comments

Powered by Blogger.