জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫ টি অসাধারণ হাদিস

জাহান্নাম থেকে মুক্তির ১৫ টি অসাধারণ হাদিস
এক. গীবত থেকে দূরে থাকা
আসমা বিনতে ইয়াযীদ হতে বর্ণিত, নবী সা. বলেন, যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভায়ের অনুপস্থিতিতে (তার গীবত করা ও ইজ্জত লুটার সময় প্রতিবাদ করে) তার সম্ভ্রম রক্ষা করে সেই ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কাছে এই অধিকার পায় যে তিনি তাঁকে দোযখ থেকে মুক্ত করে দেন।
আহমদ, ত্বাবারানী, সহীহুল জামে- ৬২৪০
# কিন্তু বর্তমানের হাল হলো, কোথাও কারো নিন্দা করা হলে আমরা প্রতিবাদ না করে বরং নিজেরাই অংশগ্রহণ করি। তবে নবী সা.-এর এ হাদিস থেকে তারাই শিক্ষা নিবে যারা জান্নাত যেতে ইচ্ছুক।
দুই. প্রতিদিন ৩৬০ বার তাসবিহ, তাহলিল, তাকবীর, তাহমিদ আদায় করা
আয়েশা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘‘আদম সন্তানের মধ্যে প্রত্যেক মানুষকে ৩৬০ গ্রন্থির উপর সৃষ্টি করা হয়েছে। (আর প্রত্যেক গ্রন্থির পক্ষ থেকে প্রদেয় সাদকা রয়েছে।) সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহু আকবার বলল, আল-হামদুলিল্লাহ বলল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল, সুবহানাল্লাহ বলল, আস্তাগফিরুল্লাহ বলল, মানুষ চলার রাস্তা থেকে পাথর, কাঁটা অথবা হাড় সরাল, কিম্বা ভাল কাজের আদেশ করল অথবা মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করল, (এবং সব মিলে ৩৬০ সংখ্যক পুণ্যকর্ম করল), সে ঐদিন এমন অবস্থায় সন্ধ্যা করল যে, সে নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূর করে নিল।
সহিহ মুসলিম হাদিস-২২২০, হাদিস একাডেমী
তিন. ৪০ দিন তাকবীরে উলার সাথে সলাত আদায় করা
রাসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ৪০ দিন জামাতে সলাত আদায় করবে এবং তাকবীরে তাহরিমা পাবে অর্থাৎ সলাত আরম্ভ হওয়ার সময় উপস্থিত থাকবে আল্লাহ তাকে ২টি জিনিস থেকে মুক্তি দিবেন। ১- জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন এবং ২- মুনাফিকি থেকে মুক্তি দিবেন।
সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] হাদিস ২৪১, তাকবিরে উলার ফজিলত অধ্যায়
চার. অসুস্থ অবস্থায় নিম্নের দোয়া পড়া
আবূ সাঈদ খুদরী রা. এবং আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তাঁরা উভয়েই রাসূলুল্লাহ সা. এর প্রতি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অল্লাহু আকবার [لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أكْبَرُ] (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আল্লাহ সবচেয়ে বড়) বলে, আল্লাহ তার সত্যায়ন করে বলেন, আমি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমি সবচেয়ে বড়।
আর যখন সে বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকা লাহ [لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ] (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই), তখন আল্লাহ বলেন, আমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আমি একক, আমার কোন অংশী নেই।
আর যখন সে বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লাহুল মুলকু অলাহুল হাম্দ [لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ] (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, সার্বভৌম ক্ষমতা তাঁরই এবং তাঁরই যাবতীয় প্রশংসা), তখন আল্লাহ বলেন, আমি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, সার্বভৌম ক্ষমতা আমারই এবং আমারই যাবতীয় প্রশংসা।
আর যখন সে বলে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অলা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ [لاَ إله إِلاَّ اللهُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ باللهِ] (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফেরার এবং সৎকাজ করার বা নড়া-চড়ার শক্তি নেই), তখন আল্লাহ বলেন, আমি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমার প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার বা নড়া-চড়ার শক্তি নেই।
নবী সা. বলতেন, যে ব্যক্তি তার অসুস্থ অবস্থায় এটি পড়ে মারা যাবে, জাহান্নামের আগুন তাকে খাবে না। (অর্থাৎ সে কখনো জাহান্নামে যাবে না।) (সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] ৩৪৩০, দোয়া অধ্যায়)
পাঁচ. বেশি-বেশি দান করা
আল্লাহর রাসুল সা. বলেন, তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ করে হয়। আর যে ব্যাক্তি এরও সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ভাল কথা বলে বাঁচে।(সহিহুল বুখারি- ১৪১৩, তাওহীদ পাবলিকেশন)
ছয়. জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া করা
হজরত আনাস রা. বলেন, আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি ৩ বার আল্লাহ্‌র কাছে জান্নাত চায়, জান্নাত তখন বলে, হে আল্লাহ্‌! ঐ ব্যাক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। পক্ষান্তরে যে ব্যাক্তি ৩ বার জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া করে, জাহান্নাম বলে; হে আল্লাহ্‌ ঐ ব্যাক্তিকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও।
(সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] ২৫৭২, জান্নাতের বিবরণ অধ্যায়)
# জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে বাচার দোয়া-
«
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ».
(আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ
উযু বিকা মিনান্নার)
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। (আবূ দাউদ- ৭৯৩, সলাত অধ্যায়)
সাত. যোহরের ফরজ নামাজের পূর্বে ৪ এবং পড়ে ৪ রাকাত নামাজ আদায় করা
উম্মে হাবীবা রা. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি বরাবর যোহরের পূর্বে চার রাকআত এবং যোহরের পরে চার রাকআত ছালাত আদায় করবে আল্লাহ্‌ তার প্রতি জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।
ইবনে মাজাহ- ১১৬০, তিরমিযী ৪২৭-২৮, আবূ দাঊদ ১২৬৯, আহমাদ ২৬২৩২। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: মিশকাত ১১৬৮, সহীহ আবী দাউদ ১১৫২
[অর্থাৎ যোহরের ফরয নামাজের আগে ৪ রাকাত এবং পড়ে ২ রাকাত ২ রাকাত করে ৪ রাকাত এই মোট ৮ রাকাত যেটা আমরা পড়ে থাকি।
বেশিরভাগ মানুষ যেহেতু সুন্নত নফল হিসাবে বুঝে থাকে তাদের সুবিধার জন্য বলছি-এই হাদিস অনুযায়ী যোহরের প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নত তারপর ৪ রাকাত ফরয তারপর ২ রাকাত সুন্নত এবং শেষে ২ রাকাত নফল, সব মিলে হবে ১২ রাকাত]
আট. মানুষের সাথে সর্বোত্তম ব্যাবহার করা
মহানবী সা. বলেন, যে ব্যাক্তি পছন্দ করে যে, তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক, তার মৃত্যু যেন আল্লাহ্‌ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখা অবস্থায় আসে এবং লোকেদের সঙ্গে সেই রকম ব্যাবহার করে, যে রকম ব্যবহার সে নিজের জন্য পছন্দ করে। (নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
নয়. চোখকে পাপ থেকে হিফাযত করা
রাসুল সা. বলেন কিয়ামতের দিন জাহান্নাম দেখবে না। ১- এমন চক্ষু যে আল্লাহ্‌র ভয়ে কাঁদে, ২-এমন চক্ষু যে আল্লাহ্‌র রাস্তায় জেগে থাকে, ৩- এমন চক্ষু যে বেগানা মহিলাকে দেখে নিচু হয়ে যায়
(শাইখ আলবানি (রঃ) প্রনিত সিলসিলাহ সহীহাহ- হাদিস ১৪৭৭)
দশ. ফজর ও আসর সালাত যথাসময়ে আদায় করা
আবু বকর ইবনু উমারাহ ইবনু রুওয়াইয়াহ হতে তার পিতার সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি এমন ব্যক্তি কখনোই জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে সালাত আদায় করে (অর্থাৎ ফজর ও আসর সালাত)। একথা শুনে বাসরার অধিবাসী একটি লোক তাকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি নিজে রাসুলুল্লাহ সা. নিকট একথা শুনেছ? সে বললো, হ্যাঁ!
সহীহ মুসলিম- ১৩১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তালার কাছে এই ২ ওয়াক্ত সলাতের রয়েছে আলাদা মর্যাদা আর এই ২ ওয়াক্ত সলাত যথার্থ মর্যাদা দিয়ে তারাই আদায় করতে পারবে যারা ৫ ওয়াক্ত সলাতের ব্যাপারে সচেতন কেননা এই ২ ওয়াক্ত সলাত সবচেয়ে বেশি কষ্টের সময়ে, যারা এই ২ ওয়াক্ত সলাত সঠিক ভাবে আদায় করতে পারে তাদের জন্য বাকি ৩ ওয়াক্ত আদায় করা খুবই সহজ।
এগার. আন্তরিকভাবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর স্বীকৃতি দেওয়া
ইতবান বিন মালিক রা. হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লহকে সন্তুষ্ট করার জন্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, ক্বিয়ামতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। (মুসনাদে আহমাদ- হাদিস ১৬৪৮২)
এ হাদিসের অর্থ এই নয় যে, শুধু আপনি ১ বার মুখে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললেন আর জান্নাত চলে গেলেন বরং যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর স্বীকৃতি দিবে তখনই তার উপর ইসলামের ফরয বিধানগুলো পালন করা আবশ্যক হয়ে যাবে আর এজন্যই মক্কার মুশরিকরা এই স্বীকৃতি দিতো না কারণ তারা জানতো তাওহিদের এই স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থই হচ্ছে বহু দেবতার ইবাদত বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র-ই ইবাদত করতে হবে।
বারো. কন্যাসন্তানদের ভালভাবে লালন-পালন করা
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আমার নিকট একটি মহিলা তার দুটি কন্যাকে সঙ্গে করে ভিক্ষা করতে (গৃহে) প্রবেশ করল। কিন্তু সে আমার নিকট খেজুর ছাড়া আর কিছু পেল না। আমি খেজুরটি তাকে দিলাম সে সেটিকে দুই খণ্ডে ভাগ করে তার দুটি মেয়েকে খেতে দিল। আর নিজে তা হতে কিছুও খেলনা। অতঃপর সে উঠে বের হয়ে গেল।
তারপর নবী সা. আমাদের কাছে এলে আমি ঐ কথা তাঁকে জানালাম। ঘটনা শুনে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি একাধিক কন্যা নিয়ে সঙ্কটাপন্ন হবে, অতঃপর সে তাদের প্রতি যথার্থ সদ্ব্যবহার করবে, সেই ব্যক্তির জন্য ঐ কন্যারা জাহান্নাম থেকে অন্তরাল (পর্দা) স্বরূপ হবে।
সহিহুল বুখারী- ১৪১৮, তাওহীদ পাবলিকেশন
তের. ফরয সিয়ামের পাশাপাশি বেশি-বেশি নফল সিয়াম পালন করা
রাসুল সা. বলেন রোযা (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য ) ঢালস্বরূপ । (বুখারী- ১৮৯৪
রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেন যে ব্যাক্তি আল্লাহর পথে ১ দিন রোযা রাখবে, আল্লাহ্‌ ঐ ১ দিন রোযার বিনিময়ে তার চেহারাকে জাহান্নাম হতে ৭০ বছর (পরিমাণ পথ) দূরে রাখবেন। (বুখারী- ২৮৪০, তাওহীদ পাবলিকেশন)
#সহিহ হাদিসে বর্ণিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিয়াম/রোযা পালনের দিনসমূহ
(শাওয়াল মাসের রোযা)
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোযা পালন করল অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা আদায় করল সে যেন সাড়া বছর রোযা পালন করল। (মুসলিম : ২৮১৫)
(প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখা)
এ তিনটি রোযা আদায় করলে পূর্ণ বছর নফল রোযা আদায়ের সওয়াব লাভের কথা এসেছে। একটি নেক আমলের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ দেয়া হয়। তিন দিনের রোযার সওয়াব দশগুণ করলে ত্রিশ দিন হয়। যেমন আবু কাতাদা রা. হতে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে
প্রত্যেক মাসে তিনটি রোযা ও এক রমজানের পর পরবর্তী রমজানে রোযা পালন পূর্ণ বছর রোযা পালনের সমান। (মুসলিম : ২৮০৪)
মাসের যে তিন দিন রোযা রাখা হবে সে তিন দিনকে হাদিসের পরিভাষায় বলা হয় আইয়ামুল বিয। এ তিন দিন হল চান্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখ। বিয শব্দের অর্থ আলোকিত। এ তিন দিনের রাতগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাঁদের আলোতে আলোকিত থাকে। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এ রোযা গুরুত্বসহকারে আদায় করতেন। হাদিসে এসেছে
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুসাফির ও মুকিম কোন অবস্থাতেই এ রোযা ত্যাগ করতেন না। (নাসায়ী : ২৩৪৫)
(প্রত্যেক সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা)
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি রোযা অবস্থায় থাকব। (তিরমিযী : ৭২৫)
চৌদ্দ. মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকা
ইবনে মাসউদ রা. বর্ণনা করেন, রাসুলে আকরাম সা. বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের জানাবো না, কোন ব্যক্তি জাহান্নামের আগুনের জন্যে হারাম অথবা (বলেছেন) কার জন্যে জাহান্নামের আগুন হারাম? (তাহলে জেনে রাখ) জাহান্নামের আগুন এমন প্রতিটি লোকের জন্য হারাম, যে লোকদের কাছাকাছি বা তাদের সাথে মিলেমিশে থাকে; যে কোমলমতি নম্র প্রকৃতির ও মধুর স্বভাব বিশিষ্ট।
সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] ২৪৮৮, কিয়ামাত ও মর্মস্পর্শী বিষয় অধ্যায়
পনের. সন্তান বা আপনজনদের মৃত্যুতে ধৈর্যধারণ করা
আবূ সাঈদ খুদরী রা. বলেন এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! কেবলমাত্র পুরুষেরাই আপনার হাদীস শোনার সৌভাগ্য লাভ করছে। সুতরাং আপনি আমাদের জন্যও একটি দিন নির্ধারিত করুন। আমরা সে দিন আপনার নিকট আসব, আপনি আমাদের তা শিক্ষা দেবেন, যা আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন।
তিনি বললেন, ‘‘তোমরা অমুক অমুক দিন একত্রিত হও।’’ অতঃপর নবী (সাঃ) তাদের নিকট এসে সে শিক্ষা দিলেন, যা আল্লাহ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন। তারপর তিনি বললেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে কোন মহিলার তিনটি সন্তান মারা যাবে, তারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে আড় হয়ে যাবে।’’
এক মহিলা বলল, আর দুটি সন্তান মারা গেলে? তিনি বললেন, ‘‘দুটি মারা গেলেও (তাই হবে)।’’ (বুখারী- ১০১, তাওহীদ পাবলিকেশন)
দুনিয়াবি কোন বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আমরা কত রকমের উপায় অবলম্বন করে থাকি অথচ আমাদের সবচেয়ে বড় বিপদ জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য এই উপায়গুলো সর্বাত্মকভাবে আঁকড়ে ধরা কি আমাদের জন্য জরুরি নয়? আল্লাহ তালা আমাদের এই আমলগুলো করার মাদ্ধমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।

No comments

Powered by Blogger.